জায়গা দখলে বাধা দেয়ায় কিল-ঘুষি, বৃদ্ধের মৃত্যু

1

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি

সীতাকুন্ডে জায়গা দখলে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের কিল-ঘুষিতে মীর ইউসুফ আলী (৭০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি আর আর জুট মিলের সাবেক হিসাবরক্ষক ও উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডস্থ উত্তর ঘোড়ামারা জোড়ামতল মৃত ফরিদ কেরানির পুত্র। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের উত্তর ঘোড়ামারা এলাকায় ফরিদ কেরানীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহত ইউছুফ আলীর ভাই অসুস্থ মীর আব্দুর রহিম পারিবারিক এজমালি সম্পত্তির তিনভাগের এক অংশ সাবেক ইউপি মেম্বার মো. হেলাল উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেন। সব ভাইয়ের এজমালি সম্পত্তি হওয়ায় জায়গা বিক্রি করেও বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব করেন বিক্রেতা রহিম। দীর্ঘদিন কালক্ষেপণের পর ক্রেতা হেলাল উদ্দিন গতকাল শনিবার সকালে সীমানা নির্ধারণ করতে যায় এবং ভাড়া করা লোকজন নিয়ে তার সুবিধামত উত্তর দিক থেকে বাঁশ দিয়ে বেড়া লাগিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। এসময় ইউসুফ আলী বিষয়টি দেখতে পেয়ে দখলকারি পক্ষকে পারিবারিক বন্টকনামা না হওয়া পর্যন্ত ঘেরা ও সাইনবোর্ড দিতে বারণ করেন। এ নিয়ে ইউসুফের সাথে হেলাল উদ্দিনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হেলালের কিল-ঘুষিতে ইউসুফ কাদাযুক্ত মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে ভাটিয়ারি বিএসবিএ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে সীতাকুন্ড মডেল থানার উপ পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের ছোট ভাই অসুস্থ মীর আব্দুর রহিম বলেন, ‘জায়গাটি আমি বিক্রি করেছিলাম। পারিবারিক এজমালি সম্পত্তি হওয়ায় বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু তারা আজ এসে জোরপূর্বক অন্য সীমানায় জায়গা দখলের চেষ্টা করেন। আমার ভাই শহরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলে তা দেখতে পেয়ে ক্রেতা হেলাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে উনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ভাইকে কিলঘুসি মারেন। এক পর্যায়ে আমার ভাই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ভাটিয়ারী বিএসবিএ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকুন্ড মডেল থানার ওসি মুজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘দুপুরের দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। যেটা জেনেছি জায়গার বিষয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কিল ঘুষি মারলে উক্ত ব্যক্তি মাটিতে লুলিয়ে পড়েন। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশটি উদ্ধার করে আমরা মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসলে বলা যাবে কিভাবে লোকটি মারা গেছেন। তবে নিহত পরিবারের লোকজন থানায় আসতেছে মামলা করার জন্য। আমরাও মামলা নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
এ বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি মেম্বার আলাউদ্দিন ও তার ভাই হেলাল উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায় নি।