একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেছেন তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী। গতকাল সোমবার বিকালে রিটের পর বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চে এ রিট আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪০ মিনিট শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার (আজ) পরবর্তী শুনানির সময় ধার্য করেন।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নেই। নিবন্ধনহীন একটি দলের প্রার্থীরা কিভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হন- এ যুক্তিতে রিটটি দায়ের করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিকাল ৪ টায় শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪০ মিনিট শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানির সময় ধার্য করেন। খবর বার্তা সংস্থার
এদিনের শুনানিতে কেবল তানিয়া আমীরই বক্তব্য উপস্থাপন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় শরিক দল জামায়াতে ইসলামীকে ২২ টি আসন দিয়েছে বিএনপি। যদিও জামায়াতকে আসন বণ্টনের শুরুতে ২৫ টি আসনে ছাড় দেয়ার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো জামায়াত এবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট করে দু’টি আসনে জয়ী হয়। আর জোটের সিদ্ধান্তে দশম নির্বাচন বয়কট করে দলটি।
এরআগে, গত ২৯ অক্টোবর জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি সংগ্রহ করে ইসির আইন শাখা। ওই রায়ের ভিত্তিতেই জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করার অনুমোদন চেয়ে কমিশনে ফাইল তোলা হয়। এরপরই তা অনুমোদন করে গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারি মুদ্রণালয়ে পাঠানো হয়।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করেন তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুল জারি করেন। এরপর ২০১৩ সালের বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিল করেছিল জামায়াত। ওই আবেদনের বিষয়টি এখন পর্যন্ত সুরাহা হয়নি।