জামায়াত নিয়ে প্রশ্নে কামাল বললেন ‘খামোশ’

60

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে ক্ষেপে গেলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা কামাল হোসেন। প্রশ্নকারী সাংবাদিকদের ‘চিনে রাখার’ কথাও বলেছেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। গণফোরাম সভাপতি কামালের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গতকাল শুক্রবার সকাল সোয়া ৯ টার দিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান।
জোটের নেতাদের মধ্যে জেএসডির আসম আবদুর রব, গণফোরামের জগলুল হায়দার আফ্রিক ও রেজা কিবরিয়া, বিএনপির আবদুস সালাম এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কামাল বলেন, ‘স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, লোভ লালসা নিয়ে লুটপাঁ করছে, তাদের হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত আমরা করবই। যত শক্তিধর হোক তারা, দেশের মালিক জনগণের কাছে তাদের নত হতে হবে, তাদের পরাজয় হবেই’।সাংবাদিকরা এ সময় স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে
কামাল বলেন, শহীদ মিনারে এসব বিষয়ে কোনো কথা তিনি বলবেন না। এরপরও সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে থাকেন। একজন বলেন, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। তারপরও তারা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে নির্বাচন করছে।
৮১ বছর বয়সী কামাল এসময় ক্ষেপে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। বেহুদা কথা বল। কত পয়সা পেয়েছ এই প্রশ্নগুলো করতে? কার কাছ থেকে পয়সা পেয়েছ? তোমার নাম কি? জেনে রাখব তোমাকে। চিনে রাখব। পয়সা পেয়ে শহীদ মিনারকে অশ্রদ্ধা কর তোমরা। আশ্চর্য!
পাশে থাকা দুই একজন নেতা এ সময় কামাল হোসেনকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু আরেকজন সাংবাদিক এ সময় প্রশ্ন চালিয়ে গেলে ধমকে ওঠেন কামাল। ‘শহীদদের কথা চিন্তা কর। হে হে হে হে করছে! শহীদদের কথা চিন্তা কর। চুপ কর। চুপ কর। খামোশ’। পরে তিনি হাপাতে হাপাতে প্রশ্ন করেন, ‘আশ্চর্য! তোমার নাম কি?… কোন পত্রিকার?… টেলিভিশন, জেনে রাখলাম।
নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরোধিতায় বিএনপিকে নিয়ে যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, আওয়ামী লীগ নেতারা তখন একে ‘সাম্প্রদায়িক জোট’ আখ্যায়িত করেছিলেন জোটের সবচেয়ে বড় দল বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সখ্যের কারণে। তবে কামাল সে সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে কোনো ‘বৃহত্তর ঐক্যে’ তিনি যাবেন না। সারা জীবন যেটা করেননি, শেষ জীবনে তা কেন করতে যাবে- সেই প্রশ্ন তখন রেখেছিলেন সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কামাল।
তবে এবারের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের চেয়ে জামায়াতই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বিএনপির কাছে। নিবন্ধন হারানোয় জামায়াতের ২২ জন প্রার্থী এবার ভোট করছেন বিএনপির মনোনয়নে বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে। এই হিসেবে তারা কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেরও প্রার্থী।