জাপানের সঙ্গে ৬ সমঝোতা স্মারক

2

পূর্বদেশ ডেস্ক

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতা সংক্রান্ত ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। গতকাল শুক্রবার টোকিওতে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’ শীর্ষক সেমিনারের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে এসব স্মারক সই হয় বলে খবর দিয়েছে বাসস।
জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ও বাংলাদেশের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এর মাধ্যমে জ্বালানি খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে জেবিআইসি।
আরেকটি সমঝোতা হয়েছে অনোডা ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের (বিএসইজেড) মধ্যে। এর আওতায় অর্থনৈতিক অঞ্চলে একটি জমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে। অনোডা ইতোমধ্যে জাইকার উদ্যোগে একটি গ্যাস মিটার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সেখানে গ্যাস মিটারের অ্যাসেম্বলি, ইন্সপেকশন ও রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে। খবর বিডিনিউজের
অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি লিজ সংক্রান্ত আরেক সমঝোতা হয়েছে বাংলাদেশ নেক্সিস কোম্পানি ও বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের মধ্যে। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ নেক্সিস অর্থনৈতিক অঞ্চলের একটি কারখানায় গার্মেন্ট এক্সেসরিজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।
আরেকটি সমঝোতা হয়েছে প্লাগিট, মুসাসি সিমিতিসু ইন্ডাস্ট্রি গ্লাফিট এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মধ্যে। এর আওতায় ব্যাটারিচালিত বাইসাইকেল ও ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপন করার কথা।
পঞ্চম সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে কিপার কোর কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে, যারা বাংলাদেশে ২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে তথ্য নিরাপত্তায় কিপার প্রযুক্তি’র পাইলট প্রকল্প শুরু করবে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে একটি কোয়ান্টাম-প্রতিরোধী ডিজিটাল অর্থনীতিতে রূপান্তর করা।
অপর সমঝোতা স্মারকটি হয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বিডার মধ্যে। এই চুক্তির মাধ্যমে জাইকা ইন্টিগ্রেটেড সিঙ্গেল উইন্ডো প্ল্যাটফর্মের (আইএসডব্লিউপি) প্রাথমিক উন্নয়নে কারিগরি ও অন্যান্য সহযোগিতা দেবে। বিডা নেতৃত্বাধীন প্ল্যাটফর্মটির লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থার সেবাকে এক ছাদের নিচে আনা।
স্মারক স্বাক্ষরকারী সব পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ এর বাস্তবায়ন করা। আমি অভিভ‚ত’।
গত ১৬ বছরের বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা টেনে তিনি বলেন, ‘এই সময়ে দেশটিতে একের পর এক ভ‚মিকম্প হয়েছে, যার ফলে কিছুই অক্ষত ছিল না। এই পরিস্থিতিতে একজন ভালো বন্ধু এগিয়ে এলো। আর সেই বন্ধু হলো জাপান। আমি এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করতে’।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘চলুন হাতে হাত মিলিয়ে বাস্তবায়ন করি। এটা শুধু অর্থ উপার্জনের বিষয় নয়। এটা মানুষের জীবন পরিবর্তনের বিষয়’।
জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার শিনজি তাকেউচি অনুষ্ঠানে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে, যা ১০ বছর আগের তুলনায় তিন-চতুর্থাংশ বেশি।
জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) চেয়ারম্যান ও সিইও নোরিহিকো ইশিগুরো অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। জাপান-বাংলাদেশ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কমিটির (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ও মারুবেনি কর্পোরেশনের বোর্ড সদস্য ফুমিয়া কোকুবু-ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।