আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) জাদুঘরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত স্মারক বক্তৃতার বক্তা ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ্ খান বলেছেন, জাদুঘর আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, এটি শুধুমাত্র অতীতের নিদর্শন সংরক্ষণের স্থান নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষার, চিন্তার ও গবেষণার কেন্দ্রও বটে। জাদুঘর হলো আমাদের অতীতের দর্পণ। একটি সভ্যতার ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্য সম্পর্কে জানার অন্যতম প্রধান উৎস হলো জাদুঘর। প্রতিটি প্রতœবস্তু, প্রতিটি চিত্রকর্ম, প্রতিটি নিদর্শন আমাদের পূর্বপুরুষদের জীবনধারা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও সমাজের বিবর্তনের সাক্ষ্য বহন করে।
গতকাল রবিবার সকাল ১০ টায় চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের লেকচার গ্যালারিতে ‘গ্রন্থাগার, জাদুঘর, মহাফেজখানা : সত্যের সাধনা না রাষ্ট্রের পাহারা’ শীর্ষক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
চবি জাদুঘরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে চবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ্ খান আরও বলেন, আমরা যেন আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দেই এবং নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তুলি। একটি জাতিকে জানতে হলে তার অতীতকে জানতে হবে। আর জাদুঘর আমাদের সেই অতীতের সাথে জীবন্ত সংযোগ স্থাপন করে।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত। জাদুঘর জ্ঞানের সীমানা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আমেরিকায় বর্তমানে সরকারি প্রায় এক হাজার পাঁচ শতাধিক জাদুঘর রয়েছে। বেসরকারি ক্ষেত্রে এ সংখ্যা আরও বেশি। জাদুঘরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক।
প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ্ খান আরও বলেন, জাদুঘর সামাজিক মিলন কেন্দ্রও বটে। তিনি বলেন, জাদুঘরের জিনিসগুলো শুধু রেখে দিলে হবে না, এগুলো মানুষকে দেখাতে হবে। সময় এবং সাময়িকতা এক জিনিস নয়। মানুষের কৃতকর্মের জন্য আদিলিপি যেখানে সংরক্ষিত হয়েছে, সেখানেই জাদুঘরের গুরুত্ব বেড়েছে। তিনি দ্রæত পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে বর্তমানে জাদুঘরের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে ভাবার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এ দিনে আমরা প্রত্যাশা করি, জাদুঘরের গুরুত্ব সম্পর্কে সমাজে আরও সচেতনতা তৈরি হবে, নতুন প্রজন্ম আরও আগ্রহী হয়ে উঠবে ইতিহাস জানার প্রতি এবং আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার জন্য। সকলে একসাথে কাজ করবে। তিনি ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহŸান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা পর্ব শেষে উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ্ খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
এদিকে প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ্ খান চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারের সঙ্গে উপাচার্যের অফিস কক্ষে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এসময় তাঁর লেখা ‘বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছর পর’ ও ‘আ মরি আহমদ ছফা’ শীর্ষক দু’টি বই উপহার হিসেবে প্রদান করেন। এ সময় চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন ও চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি
