জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করতে চায় বিএনপি

1

আগামী মাসের মধ্যে জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করে নতুন গন্তব্যে পৌঁছে দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার সংলাপের বিরতিতে সাংবাদিকদের সামনে দলের ভাবনা স্পষ্ট করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
এদিন সংলাপ যতটুকু হয়েছে তাতে বিএনপি সন্তুষ্ট কী না জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, সন্তুষ্ট কী না সেটা আলোচনার পরে বলা যাবে, তবে আমরা চাই সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নতুন গন্তব্যে পৌছে শক্তিশালী গণতন্ত্র যেন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। একটা জায়গায় এসে সংস্কারের বিষয়গুলো সমাপ্ত করতে পারি এবং জুলাইয়ের মধ্যে যেন জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হতে পারে। খবর বিডিনিউজ’র
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে দুই বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সেই দুইটা হচ্ছে আস্থা ভোট ও অর্থ বিল। এই দুইটা বিষয় বাদে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। এই দুই বিষয়ে তারা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে না।আরো কয়েকটি দল তার সঙ্গে সংবিধান সংশোধনী বিল যুক্ত করেছে। এছাড়া জাতীয় সনদে সবার স্বাক্ষর থাকবে।
তিনি বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বিষয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসা গেছে। পাবলিক একাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, পাবলিক আন্ডার টেকিং কমিটিসহ আরো জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে সভাপতির পদ আসনের ভিত্তিতে বিরোধী দল প্রাপ্ত হবেন। নারীদের সংরক্ষিত ১০০ আসন রাখার বিষয়ে সবাই একমত। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। সেটা এখনো চলমান।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন। বৈঠক রয়েছেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুর মিয়া, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
ঐকমত্য কমিশন বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ধাপে ধাপে আলোচনা হবে। কোরবানির ঈদের আগে প্রথম ধাপের আলোচনা শেষে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার জন্য ২ জুন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসেছিল ঐকমত্য কমিশন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিনের প্রতিবেদন জমা পড়ে ফেব্রæয়ারি মাসে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রæয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
তারা সংবিধান সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত জানতে চায়- যাদের মধ্যে ৩৩টি মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন করে ঐকমত্য কমিশন।
আলোচনার সুবিধার্থে কয়েকটি দলের সঙ্গে একাধিক দিনও বৈঠক চলে। আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য ও আংশিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।