পূর্বদেশ ডেস্ক
‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার বিষয়ে সরকারকে সতর্ক করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, এমন কোনো কাজ করবেন যা জাতির বিরুদ্ধে যাবে। এই করিডোরের নামে কোনো কিছু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলীর স্মরণ সভায় বিএনপি মহাসচিব এই হুঁশিয়ারি দেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ জে মোহাম্মদ আলী স্মরণে এই সভা আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিসংঘের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে ‘মানবিক করিডোর’ দেওয়ার বিষয়ে সরকারের অবস্থানের বিরোধিতা ও বিতর্কের মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ে দেশটির জান্তা সরকারের প্রতিক্রিয়া আসে। এ নিয়ে বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেছেন, নিজেদের স্বার্থে যার সঙ্গে ইচ্ছা তার সঙ্গে দেখা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। কে কী বলল, যায় আসে না। খবর বিডিনিউজের।
নিরাপত্তা উপদেষ্টার এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, এখন দেখা যাচ্ছে তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত যিনি আছেন (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) তিনি অনেক কথা বলছেন। তার মধ্যে বুধবার একটা কথা বলেছেন, ওপারে যেই থাকুক, তার সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। তো তার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন, দেশের মানুষ-জনগণের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন না।
আলোচনাটা করেন। আমরা তো দেশের স্বার্থে, স্বাধীনতার স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে আমরা কখনই তো বাধা নই বরঞ্চ আমরা সামনে এসে দাঁড়াব, বরঞ্চ লড়াইটা আমরাই করি। সেই জায়গায় দয়া করে অনুরোধ করব, বাংলাদেশে মানুষকে অবম্ল্যূায়ন করবেন না।
এখানে কিছু কিছু পন্ডিত-একামেডিশিয়ান সবাই বসে যদি মনে করেন যে চাপিয়ে দিতে পারবেন কোনো কিছু, যেটা এদেশের মানুষের পক্ষে যাবে না। সেটা কোনোদিনই করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, আজকে এমন এমন কাজ করছেন যে, বাংলাদেশের মানুষের কাছে স্পষ্ট না। প্যাসেজ দেবেন, করিডোর দেবেন, সেই করিডোর দেবেন তা নিয়ে মানুষের সাথে আলাপই করছেন না, কথা বলছেন না।
আপনি করিডোর দিয়ে দিচ্ছেন আরাকানে, যে আরাকান আর্মি সরকারেই নেই। করিডোর কি দেবেন? যদি প্রয়োজন হয় একশ বার দেবেন, মানবতাকে যদি সাহায্য করতে হয়, সাহায্য করব। কিন্তু আপনি তো দেশের জনগণকে নিয়েই সেটা করবেন।
খালেদার ফেরায় নতুন করে আলো পেয়েছে জাতি : মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া গত পরশু যখন লন্ডন থেকে ফিরে এসেছেন এবং তার চেহারার মধ্যে নতুন করে আমরা আলো দেখতে পেয়েছি। গোটা জাতি আজকে নতুন করে আলো পেয়েছে। এই সময়টাকে কাঁধে নিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগুতে হবে। প্রমাণিত হয়েছে বিএনপির হাতেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র একমাত্র নিরাপদ।
অনির্দিষ্টকাল অন্তর্বর্তী সরকার থাকবে? : গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশের হাল ধরা অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসেছে বিএনপি। সচিবালয়ের আমলাদের ৯০ শতাংশ ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (আইনজীবীরা) এখানে আলোচনা করলেন যে আপনাদের বারে অনেকে আছেন যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলেন, তাই না। তা হলে এই অনির্দিষ্টকালের জন্য অনিশ্চিত একটা অন্তর্বর্তী সরকার, এটা কি দেশের মানুষের জন্য খুব উপকারে আসবে? আসতে পারে না।
অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, আপনারা অনেক পরিবর্তন আনছেন। বলছেন যে, দৃষ্টান্ত রেখে যাবেন। আপনার, কি কি পরিবর্তন হয়েছে?