চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন জাবেদ ‘জাকাত করুণার দান নয়, এটি বঞ্চিতদের পাওনা অধিকার’ উল্লেখ করে বলেছেন, রমজান মাসে সিয়াম সাধনা মানবিক গুণাবলি বিকাশে সহায়ক। এর মাধ্যমে ধনীরা গরিবের দুঃখ-কষ্ট বুঝতে পারেন; ক্ষুধা-তৃষ্ণার জ্বালা অনুভব করতে পারেন। অসহায় নিরন্ন মানুষের যন্ত্রণা বুঝতে পারেন। তাদের ঘৃণা ও উপেক্ষা নয়, তাদের জন্য ভালোবাসা ও সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।
তিনি ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে ফজলুল হক গণপাঠাগারের ‘শত পরিবারে লক্ষ টাকার হাসি’কে একটি অনন্য আয়োজন অভিহিত করে বলেন, জাকাত ফরজ ইবাদত, জাকাত করুণার দান নয়, দয়া দাক্ষিণ্যও নয়; এটি বঞ্চিতদের পাওনা অধিকার। যেহেতু এটি তার পাওনা, সুতরাং প্রাপককে তার পাওনা সসম্মানে প্রদান করতে হবে; যাতে তিনি তা পেয়ে সন্তুষ্ট হন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন দেওয়ান বলেন, সদকা ও জাকাত এমনভাবে দেওয়া উত্তম, যা গ্রহীতা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মুদ্রা বা টাকাই অগ্রগণ্য, কেননা এর দ্বারা গ্রহণকারী নিজের রুচি ও ইচ্ছামতো প্রয়োজন মেটাতে পারেন।
প্রযুক্তিবিদ এ.কে শওকত হোসাইন বলেন, জাকাত প্রদান করা ফরজ ও সদকা আদায় করা ওয়াজিব; কিন্তু কোনো মানুষকে হেয় জ্ঞান করা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা, কারও সম্মানহানি করা নাজায়েজ ও হারাম কাজ। অনেক জাকাতদাতা নি¤œমানের শাড়ি-লুঙ্গি জাকাত হিসেবে দিচ্ছেন, তাঁরা একদিকে জাকাতকে অসম্মান করছেন, অন্যদিকে জাকাত গ্রহীতাকেও অমর্যাদা করছেন।
স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের (নিউক্লিয়াস) সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ১১নং পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান, শিক্ষানুরাগী, রাউজানে সমবায় আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে ফজলুল হক চেয়ারম্যানের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী গৃহিত ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৪ মার্চ বেলা ৩টায় ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ.কে ফজলুল হক গণপাঠাগারের উদ্যোগে হযরত ওচমান আলী মাস্টার (রহ.)-এর বাড়িতে ‘শত পরিবারে লক্ষ টাকার হাসি’ অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
মরহুমের পুত্র প্রযুক্তিবিদ ও গণপাঠাগারের পৃষ্ঠপোষক এ.কে শওকত হোসাইন হিরু’র সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন এলাকার সন্তান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন জাবেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন দেওয়ান। অতিথি ছিলেন ৪নং ওয়ার্ড সাবেক ইউপি সদস্য হাজী সামছুল আলম ও মফিজ মিয়া ফারুকী, মো. তকি সিকদার সার্বজনীন জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. দিদার কামাল খান ও পৃষ্ঠপোষক প্রবাসী মো. এমরান, আবদুস সালাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. বখতেয়ার উদ্দীন। উত্তর গুজরা ঈঁদগা পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি মো. শওকত নোমান বাবু’র সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী মো. রফিকুল আলম, মো. সেলিম সিকদার, অ্যাডভোকেট দৌলত খান, মো. আলমগীর, ইপসা উন্নয়ন সংস্থার অফিসার মোহাম্মদ শওকত হাফেজ রুবেল, মো. আজিম, তরুণ কবি ইফতেখার ইফতি, মো. আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এ.কে ফজলুল হক চেয়ারম্যানের পরিবারের পক্ষে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন মরহুমের কনিষ্ঠ পুত্র, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যানবিদ শওকত আল-আমিন। বিজ্ঞপ্তি