জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে তীব্র স্বাস্থ্য সংকট

0

পূর্বদেশ ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ এক নজিরবিহীন স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। ২০২৪ সালে তাপজনিত কারণে শ্রম উৎপাদনশীলতা হ্রাসে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব নিয়ে বিশ্বখ্যাত স্বাস্থ্য সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেট’-এর করা গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘দ্য ২০২৫ এডিশন অব দ্য ল্যানসেট কাউন্টডাউন অন হেলথ অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫০-এর দশকের তুলনায় ২০১৫-২০২৪ সময়ে ডেঙ্গু সংক্রমণের উপযোগী আবহাওয়া ৯০ শতাংশ বেড়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে আরও তীব্র করেছে। খবর বাংলানিউজের।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সি৩ইআর) এবং দ্য ল্যানসেট কাউন্টডাউন গেøাবাল টিম। এতে সহযোগিতা করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন ইউনিট।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ড. সৌর দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বায়ু দূষণ, রোগের প্রাদুর্ভাব ও কৃষিখাতের ক্ষতি—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন এখন তাৎক্ষণিক জনস্বাস্থ্য সংকটে পরিণত হয়েছে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, গত এক হাজার বছরে যা ঘটেনি, আগামী ৩০ বছরে তা ঘটবে। উপক‚লীয় এলাকায় লবণাক্ততা ও পানি নিরাপত্তাহীনতা এখন মানুষের দৈনন্দিন স্বাস্থ্যঝুঁকি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সূক্ষ বস্তুকণার (পিএম ২.৫) সংস্পর্শে এসে ২ লাখ ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, যা ২০১০ সালের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো সরাসরি দায়ী ৯০ হাজার মৃত্যুর জন্য।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য আর ভবিষ্যতের হুমকি নয়, এটি বর্তমানের বাস্তব সংকট। এখনই সমন্বিত জাতীয় পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা না পেলে দেশের জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি ভয়াবহ চাপে পড়বে।