নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের ২৭৪ ভোটকেন্দ্র জরাজীর্ণ। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলার এসব ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করে মেরামতের জন্য নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জরাজীর্ণ ও মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রগুলো সংস্কার ও মেরামতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে ইসি। সরকার থেকে ইঙ্গিত পেলে সময়মতো সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতেই আগেভাগে এমন উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ২ হাজার ২৩ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ইসি বলছে, বিভাগ অধীনস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোটখাটো সংস্কারের জন্য প্রতিবছর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ছাড় করে। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের তালিকায় থাকা যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোটখাটো সংস্কার, মেরামত প্রয়োজন হবে, চলতি অর্থবছরে প্রতিষ্ঠান প্রতি বরাদ্দ করা অর্থ দ্রæত ছাড় করলে তা দিয়ে সংস্কার, মেরামতকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ পূর্বদেশকে বলেন, ‘নির্বাচনের কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ করে ভোটকেন্দ্রগুলো মেরামতে চাহিদাপত্র নিয়েছি। উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রেরিত এই তালিকা আমরা ইসিতে প্রেরণ করেছি। ইসি কেন্দ্রীয়ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ভোটকেন্দ্রগুলো মেরামতে হয়তো পত্র প্রেরণ করবে। কেন্দ্রীয়ভাবেই এটি মনিটরিং করা হবে’।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরে ৩৫টি ও জেলায় ২৩৯টি ভোটকেন্দ্র জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এর মধ্যে কোতোয়ালীতে দু’টি, ডবলমুরিংয়ে একটি, পাঁচলাইশে ২২টি, চান্দগাঁওয়ে পাঁচটি, বন্দরে পাঁচটি, মিরসরাইয়ে ৬১টি, সীতাকুন্ডে ৪০টি, হাটহাজারীতে তিনটি, ফটিকছড়িতে ১১টি, রাউজানে তিনটি, রাঙ্গুনিয়ায় ১১টি, বোয়ালখালীতে ১২টি, পটিয়ায় ১১টি, কর্ণফুলীতে দু’টি, চন্দনাইশে ছয়টি, লোহাগাড়ায় ১৮টি, সাতকানিয়ায় একটি, বাঁশখালীতে ৫৮টি ভোটকেন্দ্র মেরামত করতে হবে।
মেরামতযোগ্য ভোটকেন্দ্রগুলোর সবই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ভবনের দরজা, জানাল, বৈদ্যুতিক লাইন, পানির লাইন, ওয়াশরুম, সীমানা প্রাচীর, টিনশেড ছাউনি, বিদ্যালয় সড়ক মেরামতে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা সংগ্রহের পর ভোটকেন্দ্র ঠিক করে রাখতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ইসি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিগত সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটকেন্দ্র এবং সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমানা প্রাচীর নেই এবং কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা-জানালা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। চিঠিতে সীমানা প্রাচীর না থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় তা নির্মাণ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নিজস্ব অর্থায়নে ছোটখাটো মেরামত ও সংস্কার করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদকে নিজস্ব অর্থায়নে সীমানা প্রাচীর না থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং ছোটখাটো মেরামত বা সংস্কার করে ভোটকেন্দ্রকে ভোট গ্রহণ উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।