নিজস্ব প্রতিবেদক
ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৬তম আসর অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ এপ্রিল। ওইদিন বিকেল চারটায় লালদীঘি মাঠে এ বলিখেলা অনুষ্ঠিত হবে। বলীখেলা উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও বসবে ৩ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। ২৪, ২৫ ও ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য এই মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক প্রস্তুতি।
বলীখেলা ও মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাথে মেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জানানো হয়, আবদুল জব্বারের বলীখেলা শুধু কুস্তির আসর নয়, এটি চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই শহরের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন আয়োজকরা।
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি দক্ষিণ মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, এডিসি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মামুন, এসি কোতোয়ালী মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল আলম খোরশেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী, রবিউল আলম, মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বলীখেলার প্রবর্তক মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগরের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল, বলীখেলার প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান এবং সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন বালি।
মেলা কমিটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৫ এপ্রিল বিকেলে লালদীঘি মাঠে বলিখেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল থেকে লালদীঘির পাড়সহ আশপাশে এলাকায় বৈশাখী মেলা শুরু হবে। শেষ হবে ২৬ এপ্রিল।
সভায় এবার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেলার কারণে যাতে জনসাধারণের চলাচলে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য আন্দরকিল্লা থেকে আদালত ভবনের প্রবেশপথ পর্যন্ত এলাকায় প্রধান সড়কে কোনো স্টল না বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মেলাকে ঘিরে স্টল বিক্রি, দোকান বিক্রি, দখল, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে যুবসমাজকে জাগাতে ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে প্রথম বলিখেলার আয়োজন করেন চট্টগ্রাম শহরের বদরপাতির বনেদি ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার সওদাগর। এর ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর এদিনে বলিখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কালক্রমে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৈশাখী মেলাও।
বলিখেলা দেখতে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন ভিড় করেন লালদীঘি ময়দানে। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে হস্তজাত, গৃহস্থালীসহ নানা পণ্যের পসরা নিয়ে আসেন ক্ষুদ্র বিক্রেতারা।