জনস্বার্থে এ আদেশ বাতিল চান ব্যবসায়ী নেতারা

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বন্দরের চারগুণ কন্টেইনার চার্জ বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রায় ৩ মাস থেকে চলমান এ আদেশ জনস্বার্থে বাতিল চান তারা। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এ অনুরোধ জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের দাপ্তরিক হরতাল দেশের ব্যবসায়ীদের আমদানি রপ্তানিতে প্রচুর ক্ষতির পাশাপাশি বাজারে খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ অতি মাত্রায় বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ঈদের ১০দিন ছুটি এবং প্রায় ২ মাস যাবত কাস্টমসের কলমবিরতি, শাটডাউন বা হরতাল ইত্যাদির কবলে পড়ে ব্যবসায়ীরা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। বিলম্বের কারণে শিপিং কোম্পানির কন্টেইনার রেন্ট ১২০ ডলার হারে প্রতিদিন ডেমারেজ প্রদান করে ব্যবসায়ীরা আরও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যা খাতুনগঞ্জ, মৌলভী বাজার ও অন্যান্য পাইকারি বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।এমতাবস্থায়, দেশের ক্ষতিগ্রস্ত, নির্দোষ কন্টেইনার গ্রহণে কাস্টমস প্রতিবন্ধকতায় পতিত আমদানিকারকের উপর চট্টগ্রাম বন্দরের ৪গুণ কন্টেইনার চার্জ আরোপে প্রায় ৩ মাস থেকে চলমান বন্দর সার্কুলার নং-০২/২৫ জনস্বার্থে বাতিল করার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
শুধু তাই নয়, এ আদেশের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) চট্টগ্রামের সাবেক নেতারা বন্দর চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাৎ করে চারগুণ চার্জ আদায়ের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান।
এর আগে গত ২৪ মে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আরোপ করা নির্দিষ্ট হারের অতিরিক্ত ৪ গুণ ‘স্টোর রেন্ট’ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যাসোসিয়েশন।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় বলা হয়, বন্দর বা আইসিডি থেকে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আরও অন্যান্য এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকে। এছাড়া ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়। ফলশ্রæতিতে আমদানি পণ্যের চারগুণ বিলম্বের মাশুল আদৌ যৌক্তিক নয়। তাই বিষয়টি চারগুণ স্টোর রেন্ট বা বিলম্ব মাশুলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত।
বন্দরের তথ্য মতে, আমদানিকৃত পণ্যবাহী কনটেইনার বন্দরে আসার পর চার দিন ফ্রি টাইম থাকে। এ সময়ে পণ্য খালাস নিলে কোনো ভাড়া বা স্টোর রেন্ট দিতে হয় না। স্বাভাবিক সময়ে ফ্রি টাইমের পরে প্রথম ৭ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট একক কনটেইনারের জন্য ৬ ডলার, ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য ১২ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য একক প্রতি ২৪ ডলার, ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য ৪৮ ডলার এবং তৃতীয় ধাপে ২১ দিনের মধ্যে খালাস নিতে প্রতিদিন ২০ বর্গফুট কনটেইনারের ৪৮ ডলার এবং ৪০ বর্গফুট কনটেইনারে ৯৬ ডলার করে ভাড়া দিতে হয়।
গত ১০ মার্চ থেকে এই ভাড়া চারগুণ হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ফ্রি টাইমের পর ২০ বর্গফুট কনটেইনারের জন্য প্রথম ৭ দিন দৈনিক ২৪ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিন দৈনিক ৯৬ ডলার, তৃতীয় ২১ দিন দৈনিক ১৯২ ডলার করে ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। একইভাবে ৪০ বর্গফুট কনটেইনারের ক্ষেত্রে প্রথম ৭ দিন দৈনিক ৪৮ ডলার, দ্বিতীয় ১৩ দিন দৈনিক ১৯২ ডলার এবং তৃতীয় ২১ দিন থেকে দৈনিক ৩৮৪ ডলার করে ভাড়া আদায় করছে বন্দর।