জনগণের কথায় ‘ব্যাড সাইন’, দ্রুত ভোট চান ফখরুল

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার দাবি করেছেন। পেছনে ‘রাজনৈতিক শক্তি নাই’ বলে অন্তর্বর্তী সরকার দেশে ‘কিছুই করতে পারছে না’ বলেও মূল্যায়ন করেছেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনায় বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের স্মরণে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনায় ফখরুল সোমবার মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অবরোধ নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। খবর বিডিনিউজের।
ফখরুল জানান শুনেছেন, মানুষ বলছে, ‘আমি রিকশা চালাতে পারিনি সারাদিন’, ‘আমি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চার ঘণ্টা ধরে আটকে আছি’, ‘আমার গাড়িতে লাউসহ সব কিছু পড়ে আছে এসব পচে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে, ‘এর জন্য কি আমরা আন্দোলন করেছিলাম?’
বিএনপি নেতা বলেন, সাংবাদিক ভাইয়ারা কি আমার সাথে একমত হবেন? কথাগুলো আসতে শুরু করেছে, দিস ইজ এ বেড সাইন। বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ যে কথা-বার্তাগুলো বলছে সেটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। সব জিনিসের দাম বেড়েছে।
যারা ‘শত্রু’, ‘ফ্যাসিবাদীদের মিত্র’, তারা এই সুযোগ নেবে বলে সতর্ক করে ফখরুল বলেন, এটা থেকে জাতিকে রক্ষা করার একমাত্র উপায় সকলের সাথে আলোচনা করে অতি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আমরা রাজনীতিবিদরা বলছি, আমরা বলছি যারা আমরা একটু বয়স্ক-প্রাজ্ঞ, বলছি নির্বাচন দ্রুত করুন।
কেন বিএনপি নির্বাচন চাইছে সে প্রশ্নের জবাব দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য? না। নির্বাচন দ্রুত না হলে সমস্যাগুলো বাড়বে। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ধ্বংস করতে চায়, তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
সংবিধানে সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলা আছে। দৈব দুর্বিপাকে সেটি করা না গেলে আরও ৯০ দিন সময় নেওয়া যায়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, আগে ‘সংস্কার’ পরে নির্বাচন। বিএনপি বারবার তাগাদা দিলেও নির্বাচনের কোনো রূপরেখা দিচ্ছে না সরকার।
সরকারের কর্মকান্ডের ফোকাসটা ‘এক জায়গায়’ করার তাগিদ দিয়ে ফখরুল বলেন, সেই ফোকাসটা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে ঠিক করে, প্রশাসনকে ঠিক করে, বিচার ব্যবস্থাকে ঠিক করে নির্বাচনের দিকে যান।
বাকিগুলো (সংস্কার) যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে তারা করবে। আমরা আগে থেকেই বলে আসছি যে, নির্বাচিত হয়ে আসলে আমরা একা দেশ চালাব না। আমরা একটা জাতীয় সরকার গঠন করে যারা আমাদের সাথে আন্দোলন করেছে তাদেরকে নিয়ে দেশ চালাব।
এরই মধ্যে সরকারের ১০০ দিন পূর্তি হয়েছে, জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা দাবি করেছেন, অর্থনীতি এখন শক্তিশালী হয়েছে, রিজার্ভ ‘বাড়ছে’, পোশাক কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে মির্জা ফখরুল মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘ব্যর্থ’ হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেখুন না কত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এখন দেশে সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করার জন্য কাজ করা হচ্ছে, ফ্যাক্টরি জ্বালিয়ে দিচ্ছে যা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ, দিনের পর দিন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) কিছুই করতে পারছে না।