ছেলের বরযাত্রার সময়ে মায়ের শবযাত্রা

1

রাউজান প্রতিনিধি

ঘরভর্তি মেহমান, কেউ আছেন আপ্যায়নে, কেউ আছেন আড্ডা-গল্পে, কেউ কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছেন বরযাত্রার। চা-নাস্তা খেয়ে বরের মা ছকিনা বেগম মেহমানদের সাথে কুশলাদি বিনিময়ে ব্যস্ত। রাউজান পৌরসভার একটি কমিউনিটি সেন্টারে চলছিল বরযাত্রীদের জন্য রান্নার আয়োজন। আশপাশের বাড়িগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে আনন্দের ছটা। হঠাৎ করে ছন্দপতন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পরপারের অনন্তকালের যাত্রী হয়ে গেলেন বরের মা। এই যেন হর্ষে-বিষাদ। মুহূর্তেই স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে এলাকার পরিবেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের কমর আলি সিকদার বাড়ির প্রয়াত আলী আহমদ সিকদারের বাড়িতে। এদিন ছিল প্রয়াত আলী আহমদ ও ছকিনা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ ছেলে প্রবাসী মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক মাছুমের বিবাহ অনুষ্ঠান। ২৬ ফেব্রুয়ারি ছিল তার মেহেদী রজনী। এ অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠে ছেলেকে আশীর্বাদ দিয়েছিলেন মা। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় ছেলের সাথে বরযাত্রা যাওয়ার কথা থাকলেও আর যাওয়া হয়নি। ঠিক একই সময় অনুষ্ঠিত হল মায়ের জানাজা।
বরের খালত ভাই মাওলানা মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরী বলেন, গত বুধবার ছিল আবু বক্কর ছিদ্দিকের মেহেদী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মঞ্চে বরের মায়ের সাথে আমিও উঠেছিলাম। আজ সকালে সবাই চা-নাস্তা আপ্যায়নে ব্যস্ত সময় পার করছিল। খালাম্মাও চা খেয়ে বসেছিল। হঠাৎ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢলে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার সুযোগ হয়নি। এর পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন। একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আয়োজন থাকলেও তা বাতিল হয়ে যায়। বেলা আড়াইটায় আমার ইমামতিতে সিকাদর বাড়ি জামে মসজিদ মাঠে তার জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। বিকাল ৪টার দিকে আমরা কয়েকজন পৌরসভার জানালী হাটস্থ কনের বাপের বাড়ি গিয়ে আক্বদ শেষে মেয়ে নিয়ে এসেছি।