আনোয়ারা প্রতিনিধি
পারকি সৈকতে চলছে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য। এর সাথে রয়েছে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের বিরক্তি। আবার মোটরসাইকেলগুলোর ট্রিপে পর্যটকদের ঠকতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে অতিষ্ঠ পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী ফাতেমা বেগম (২০) বন্ধুকে নিয়ে গতকাল ঘুরতে আসেন কর্ণফুলী টানেলে। সেখান থেকে যান পারকি সৈকতে। বিকাল ৫টার দিকে পারকি খাল সংলগ্ন টানেল সার্ভিস এরিয়ার কাছাকাছি এলেই পড়েন ছিনতাইকারীর কবলে। খাল পেরিয়ে আসা দুই ছিনতাইকারী ফাতেমার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয়। তখন ফাতেমা ও তার বন্ধু ছিনতাইকারীদের ধরতে দৌড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা মৎস্যজীবীদের ঘরের সামনে গিয়ে ধারালো ছুরি বের করে টাকা দিতে বলে। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তারা ফাতেমার সাড়ে তিন আনা ওজনের দুটি কানের দুল নিয়ে নেয়। এ সময় স্থানীয় পারভেজ নামে এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ব্যাগ ও মোবাইল ফোনগুলো ফেরত নিতে সক্ষম হন।ফাতেমা বলেন, আমি ৯৯৯ কল করি। এরপর আমার সাথে সৈকত ব্যবসায়ী সমিতির কয়েকজন যোগাযোগ করেন। কিন্তু আমার কানের দুলের কোন খোঁজ পাইনি। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করব।
এভাবে প্রায় সময় ছিনতাইকারীর কবলে পড়ছেন পর্যটকরা। তারা ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন।
এদিকে গতকাল বিকালে পারকি সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ ঘুরতে আসা পর্যটক এবং সাধারণ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া যত্রতত্র দোকানপাট বসানোর ফলে পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা বিঘিœত হচ্ছে।
সৈকতে অবৈধ মোটরসাইকেলগুলো পর্যটকদের ঠকিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ২ থেকে ৩ ট্রিপ ১২০-১৫০ টাকা দর করে উঠার পর জোর করে হাতিয়ে নিচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত। এ নিয়ে পর্যটকদের সাথে হাতাহাতি পর্যন্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশের অন্যতম এ পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পর্যটকরা অবিলম্বে সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশক্যাম্প স্থাপনসহ প্রশাসনের আন্তরিক পদক্ষেপ দাবি করেন।
পারকি সৈকত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. কাশেম বলেন, গত কিছুদিন ধরে পারকি সৈকতে চিহ্নিত ছিনতাইকারী মো. আবু প্রকাশ পেট্টো কয়েকজনকে নিয়ে ছিনতাই করা শুরু করেছে। এছাড়া সৈকতে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো ও যত্রতত্র দোকানপাট খুলে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্ণফুলী টানেল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এবারের মৌসুমে পারকি সৈকতে পর্যটনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা দ্রুত সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাম্প স্থাপন এবং স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি জোরদার করার দাবি জানাচ্ছি।
কর্ণফুলী থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, সৈকতে এক পর্যটকের কানের দুল নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আকতার বলেন, পারকি সৈকতের বিষয়ে আমাদের একটি পরিকল্পনা আছে। শীঘ্রই আমরা ব্যবসায়ীসহ সকল পক্ষের সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেব। সবকিছু একটি সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসব।