নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অস্ত্র নিয়ে হামলা করা সন্ত্রাসীদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাদের যদি সরকার আইনের আওতায় আনতে না পারে, ছাত্ররা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।
গতকাল রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এমন ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের নেতারা। এদিন বিকালে নগরের প্যারেড কর্ণার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি চকবাজার, জামালখান, আন্দরকিল্লাহ, কোতোয়ালী হয়ে নিউমার্কেট গিয়ে সমাপ্ত হয়। এতে হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেন। ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘হাসিনাকে আনবো, ফাঁসিতে ঝুলাবো’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, আওয়ামী লীগের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’- স্লোগান দেওয়া হয়।
নিউমার্কেট মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিজাউর রহমান প্রমুখ। এসময় জুলাই আন্দোলনে আহত দুজন শিক্ষার্থীও বক্তব্য রাখেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার মানুষ রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করেছে। পতিত শক্তির সঙ্গে কোনো আপোষ নেই। এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। পতিত শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইলে ভেঙে দেওয়া হবে। শহীদের রক্ত রঞ্জিত জমিতে তাদের দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। তারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইলে আমরা আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থেকে কঠোর হস্তে দমন করব।
কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনও এ দেশের মাটিতে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। দ্রæত তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে ছাত্ররা। আজকে নাকি তারা রাজপথ দখলে নিবে বলেছিল। কিন্তু তাদের রাজপথে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই স্বৈরাচারের দোসরদের জায়গা বাংলার মাটিতে আর হবে ন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রিজাউর রহমান বলেন, শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত, শহীদ ফরহাদ, শহীদ হৃদয় তরুয়া পূর্ণভ‚মি চট্টগ্রাম। এই চট্টগ্রাম মাটিতে নওফেলের (সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল) মতো কুলাঙ্গারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এখনো রাজপথ ছাড়িনি। রাজপথে থেকে এসব ষড়যন্ত্র আমরা প্রতিহত করবো। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমরা ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগকে চট্টগ্রামের রাজপথে প্রতিহত করেছিলাম। সামনেও তাদের আমরা কড়া জবাব দিবো। স্বৈরাচারের ঠাঁই বাংলার মাটিতে হবে না।
জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী লাবিব মোরশেদ বলেন, জুলাইয়ের আমাদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়েছে। গুলি করে, অস্ত্র চালিয়েও দাবায় রাখা যায়নি। বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে ভবিষ্যতেও দাবায়ে রাখা যাবে না। খুনীদের প্রতিহত করতে হবে।