জুতা কারখানার শ্রমিক রমজান মিয়া জীবন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ঘরে রেখে গিয়েছিলেন সরকার উৎখাতের আন্দোলনে। ৫ আগস্ট মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দুই মাস চারদিন পর হাসপাতালেই সাঙ্গ হল তার জীবনের। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, গুরুতর আহত জীবনকে হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। গতকাল বুধবার বিকাল ৩টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের
তার চাচা মো. রোমান হাসপাতালের মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, জীবন ছিলেন বিএনপির কর্মী, দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দিলালপুর ইউনিয়নের পাঠান হাটি গ্রামে। জীবনের স্ত্রী সাহারা খাতুন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
ঢাকার মিরপুরের লালমাটি এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন জীবন। কাজ করতেন পুরান ঢাকার আলুবাজার এলাকার একটি জুতা তৈরির কারখানায়। জীবনের বাবা জামাল মিয়া নর্দ্দার একটি বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে জীবন ছিলেন তৃতীয়।
রোমান বলেন, গত ৫ আগস্ট মিরপুরের বাসায় যাওয়ার কথা বলে আলুবাজারের কারখানা থেকে বের হয় জীবন। পরে বেলা ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায় আওয়ামী লীগ অফিসের কাছ থেকে তাকে আহত অবস্থায় রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান কয়েকজন। তার মা আমেনা খাতুন জানান, ৫ আগস্ট রাস্তায় সংঘাতের খবর শুনে জীবনকে ফোন করেছিলেন তিনি। তখন ওই প্রান্ত থেকে আরেকজন ফোন ধরে বলেছিলেন, জীবন আহত হয়েছেন, তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। চাচা রোমান বলেন, আমরা সংবাদ শুনে ঢাকা মেডিকেলে এসে তাকে প্রথমে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শত শত আহতের ভিড়ে বিকালে ওরে খুঁইজা পাই। প্রথমে শুনছিলাম তার মাথায় গুলি লাগছে। মাথায় ব্যান্ডেজ মোড়ানো ছিল, জ্ঞান ছিল না। এরপর আর তার জ্ঞানই ফিরল না। ডাক্তাররা আইসিইউতে নিল। সেখান থাইকাই আইজকা লাশ বাইর করলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে দেওয়া জীবনের মৃত্যু সনদে মাথায় জখমের কথা বলা হয়েছে।