‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান’ দিবস ৫ আগস্ট

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেওয়া ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের দিনটি সাধারণ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্ম ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের ৯ জন সদস্য বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি শুরু হবে। তবে মূল আয়োজন শুরু হবে ১৪ জুলাই থেকে, চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত।
এর উদ্দেশ্য হচ্ছে জুলাই আগস্টের আন্দোলনে পুরো বাংলাদেশ যেরকম এক হয়েছিল, সেই অনুভূতিটাকে ফিরিয়ে আনা। অনুভূতিটা আমাদের মাঝে আছে, সেটাকে জাস্ট রিইনফোর্স করা। খবর বিডিনিউজের।
এ উপলক্ষে অনেক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপাতত জানানো যাচ্ছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে ছুটি ঘোষণা করা হবে। এ বছর থেকে প্রতিবছরই এই ছুটি পালিত হবে।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের ইতিহাস পড়ে।
৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দন্ড প্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা। শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সরকারের তরফে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।
আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, সেখানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪। তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই ঘোষণাপত্র : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, জুলাই সনদ ছাত্র-জনতার একটি দাবি। আগামী ৫ আগস্টের আগেই যাতে জুলাই সনদ ঘোষণা করা যায়, সেজন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।
কমিটির প্রধান রাখা হয়েছে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্যারকে। আরো কয়েকজন উপদেষ্টা ওয়াহি উদ্দিন মাহমুদ স্যারের নেতৃত্বে কাজ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে উনারা দ্রæতই এই প্রোকলেমেশন প্রকাশ করবেন।