চুয়েটে কর্মবিরতি অব্যাহত, ঘটনা তদন্তে কমিটি

33

রাউজানস্থ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর মেডিকেল অফিসার ডা. খোরশেদ আলমের উপর ছাত্রলীগ সমর্থক শিক্ষার্থীদের হামলার জের ধরে অচলাবস্থার অবসান হয়নি তিন দিনেও। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার দায়ী ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতি। এই ঘটনায় গতকাল সোমাবর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ। এছাড়াও এর প্রতিবাদে চুয়েটের চিকিৎসকরা বিএমএ’র পরামর্শে কর্মবিরতি পালন করছেন।
জানা যায়, গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগ ডে অনুষ্ঠানে কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক মেডিকেলে এসে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. খোরশেদ আলমের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স চায়। ডা. খোরশেদ আলম এর কারণ জানতে চান। উত্তরে শিক্ষার্থীরা জানায়- র‌্যাগ ডে উপলক্ষে বাংলা মদ আনার জন্য। একরণে ডা. খোরশেদ তাদের অ্যাম্বুলেন্স দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে দুই ধাপে হামলা করে মারধর করে।
তবে চুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ ইমাম বাকেরের দাবি, চুয়েটে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কোনো রোগের ঔষধ ও ভালোমত চিকিৎসা দিতে পারেন না। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে চিকিৎসকের দীর্ঘদিন ঝামেলা রয়েছে। চুয়েট প্রশাসনে অভিযোগ করেও এ পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। সেই দিনও ছাত্রলীগের কয়েক নেতা চিকিৎসার জন্য গেলে সেখানে ঠিকমত চিকিৎসা করতে না পারায় চিকিৎসক খোরশেদকে শহরে চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স দিতে বলে। ডা. খোরশেদ অ্যাম্বুলেন্স দিতে না চাইলে হাতাহাতি হয়। তবে এই ঘটনাটি বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন ধামা চাপা দিতে চাইলেও গতকাল সোমবার কর্মকর্তা সমিতির নেতৃবৃন্দ এর প্রতিকার চেয়ে ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমকে ৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে লিখিত অভিযোগ করে। ফলে বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এ এই সমস্যার সমাধে আশ্বাস দেন চুয়েট ভিসি। তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন তিনি।
হামলার শিকার ডা. খোরশেদ আলম বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী যারা হামলা করেছে তাদের ব্যাপারে আগেও বেশ কয়েকবার মদ নিয়ে চুয়েট ভিসির কাছে অভিযোগ রয়েছে। সেই দিনও তারা র‌্যাগ ডে উপলক্ষে মদ আনায় আমি অ্যাম্বুলেন্স দিনে অস্বীকৃতি জানাই। তাই তারা আমার উপর দুই দফা হামলা করে। তাই আমরা সোমবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছি। যতদিন এর সুরাহা না হবে, ততদিন এ কর্মবিরতি চলবে।
এ বিষয়ে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার নেতা ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, চুয়েটের শিক্ষার্থী তথাকথিত ছাত্রলীগ নেতা অতনু মুখার্জী, ফাহাদ হাসানের নেতৃত্বে এক শিক্ষার্থী বাংলা বদ আনার জন্য বিশ^বিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সটি চায়। তাই চিকিৎসক খোরশেদ অ্যাম্বুলেন্সটি না দিলে শিক্ষার্থীরা ডা. খোরশেদকে মারধর করে। এই বিষয়ে চুয়েট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিয়ে সকল চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ঘোষণা দেন।
বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, কি কারনে এই ঘটনা তা জানার জন্য আজ (সোমবার) তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি সোমবার বিকেল থেকে কাজ শুরু করেছে। তাদের তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।