নিজস্ব প্রতিবেদক
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) চীফ কমান্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলামকে অপসারণ, বৈতন বৈষম্য, পদোন্নতিসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আরএনবি সদস্যরা। গতকাল বিকালে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে বাহিনীর শতাধিক সদস্য বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। এসময় তারা চীফ কমান্ডেন্টের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন তারা। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার পতনের পর এমন অস্তিরতায় পূর্বরেলের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এ বাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। বেড়েছে অস্থিরতা।
আন্দোলনকারীরা জানান, চীফ কমান্ডেন্টের বিরুদ্ধে বদলি হলেও না যাওয়া, বদলি বাণিজ্য, পদায়ন বাণিজ্য, অপরাধ মাফ করার বিনিময়ে আরএনবি সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার মতো অভিযাগ রয়েছে। এছাড়াও সিপাহী নিয়োগে বড় ধরনের বাণিজ্য করে বহু টাকার মালিক হয়েছেন। গড়েছেন ফ্ল্যাট, বাড়ি ও গাড়ি। ইতোমধ্যে দুদক এই কর্মকর্তাসহ পরিবারের সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করেছে। নানা অপরাধে জড়িত হলেও দীর্ঘদিন ধরে পূর্বাঞ্চল আরএনবিকে কুক্ষিগত রেখে সদস্যদের অত্যাচার নির্যাতন করছেন। তার কাছে কোন দাবি নিয়ে গেলেই টাকা দিতে হয়। তার পছন্দের ব্যক্তিরাই আরএনবিতে ভালো আছে। বাকিরা বৈষম্যের শিকার হয়ে কর্মস্থলে বেকায়দায় আছেন। এসব কারনেই চীফ কমান্ডেন্টের অপসারণ দাবিতে রেল স্টেশনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে আরএনবি সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরএনবির আন্দোলনরত এক সদস্য বলেন, চীফ কমান্ডেন্ট বেতন বৈষম্য, পদায়ন, পদোন্নতিসহ নানা ইস্যুতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। নিজের পছন্দের ব্যক্তিরা ছাড়া বাকিদের তিনি সুযোগ দেন না। যে কারণে আমরা আন্দোলন করছি। তাকে দ্রæত সময়ের মধ্যে পূর্বাঞ্চল থেকে অপসারণ করতে হবে। নয়তো আমরা বড়ধরনের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের আরএনবির চীফ ইন্সপেক্টর আমান উল্লাহ আমান পূর্বদেশকে বলেন, ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর এলাকায় বøাঙ্কারে ২৩জন আরএনবি সদস্য কর্মরত ছিল। বিভিন্ন এলাকা থেকে সদস্যদের সেখানে ডিউটি দেয়া হয়। সেখানে ডিউটি পালনকালে ডাকাতদলের কবলে পড়ে সদস্যরা। তাদেরকে বেঁধে রেখে ডাকাতরা সব নিয়ে যায়। এসব নিয়েই মূলত তারা বিক্ষোভ করেছে।
গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান পূর্বদেশকে বলেন, ‘আরএনবির সদস্যরা পদোন্নতি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কিছু কথা বলেছে। এটা বড় কিছু না। আমি বিষয়টি নিয়ে এখনও কথা বলছি।’
প্রসঙ্গত, পূর্বাঞ্চলের চীফ কমান্ডেন্ট মো. জহিরুল ইসলাম ১৯৯০ সালে সাঁট মুদ্রাক্ষরিক-কাম টাইপিস্ট পদে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে যোগ দেন। ২০০০ সালে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণী পদে পদোন্নতি পান। পরবর্তীতে তিনি ২০০২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বিসিএস নন-ক্যাডারে (২১ তম ব্যাচ) বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সহকারী কমান্ড্যান্ট, ২০০৬ সালে কমান্ড্যান্ট এবং ২০২০ সালে চিফ কমান্ড্যান্ট পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত হন।