চিন্ময়ের জামিন বাতিল ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবি

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর কোতোয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় কারাবন্দী সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। একই সমাবেশ থেকে অবিলম্বে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার এবং ইসকন নিষিদ্ধের দাবিও জানানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গতকাল শুক্রবার দুপুরে নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক ইবনে হোসাইন জিয়াদ, সংগঠক আবরার হোসেন, এডভোকেট জমির উদ্দিন, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের চাচাত ভাই আদনান হোসেন, রিদোয়ান হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী নেতারা বলেন,চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের হুকুমে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে খুন করা হয়েছে। চিন্ময়কে জামিন দিয়েছেন আদালত। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, জামিন বাতিল করে তার বিচার করতে হবে। আমরা তার ফাঁসি চাই। অন্যথায় রাজপথে ব্যাপক গণআন্দোলনের মাধ্যমে এ দাবি আদায় করে নেওয়া হবে।
ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, হাজারী লেনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ওপর এসিড নিক্ষেপ করেছিল ইসকনের সন্ত্রাসীরা। তখন কোনও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আদালত চত্বরে পুলিশের হাত থেকে মাইক নিয়ে হত্যার ঘোষণা দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। এরপর তারা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করে। সেদিনই তাদের মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু চট্টগ্রামের তৌহিদী জনতা ধৈর্য ধরেছে। অনেক আসামিকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা কারাগারের বাইরে। ভারতের তাবেদারি করা ব্যক্তিদের বিচারকরা জামিন দিয়েছেন। আমরা সরকার ও আইন বিভাগকে বলতে চাই, আপনারা যদি তাবেদারি করেন, আপনাদের পতনের জন্য মাঠে নামব। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, আপনারা যদি ভারতের গোলামি করেন, তাহলে পদত্যাগ করেন। হাসিনার মতো চলে যান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিনঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং এক পর্যায়ে তা নগরীর লালদীঘির পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী সমিতি এ হত্যাকান্ডের জন্য ইসকন সদস্য ও সমর্থকদের দায়ী করে আসছে। এরই মধ্যে ইসকন থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করা হয়েছে।