নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর আক্রমণ ও মসজিদে হামলাসহ ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। গতকাল সোমবার মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহ এবং আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাসহ আরও চার মামলায় চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত।
মহানগর আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, এজাহারে নাম না থাকলেও পুলিশের তদন্তে সম্পৃক্ততার তথ্য আসায় কারাবন্দী চিন্ময়কে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতের অনুমতি চেয়েছিল তদন্ত সংস্থা। আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দেন। এরপর গত ৪ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মোস্তফা কামাল চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তাকে একদিন কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী মোড় পর্যন্ত সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। আইনজীবী হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়। এর মধ্যে আইনজীবী খুনসহ পাঁচটি মামলায় চিন্ময়কে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।