চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম নগরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র গরমে কিছুটা হলেও আরাম পাচ্ছে নগরবাসী। তবে বৃষ্টির পানিতে নগরের বিভিন্ন জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আগামী কয়েকদিন এ ধরনের বৃষ্টিপাত চলবে বলে জানিয়েছে নগরের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টিতে নগরের জিইসি মোড়, বাকলিয়া, হালিশহর, আগ্রাবাদ, চকবাজার, ডিসি রোডসহ নগরের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। এ বিষয়ে বাকলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজা জান্নাত বলে, ‘সকালে রোদ ছিল, সেই সঙ্গে প্রচন্ড গরমও। সে কারণে ছাতা নিয়ে বের হইনি। এখন স্কুল থেকে ফেরার সময় বৃষ্টি হচ্ছে, রাস্তায় পানি। বিপদে পড়ে গেলাম।’
বেসরকারি চাকরিজীবী মো. জিয়াউল হাসান বলেন, ‘জলাবদ্ধতা চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যা। বর্ষার আগে সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়, এই বছর জলাবদ্ধতার সমস্যা হবে না। কিন্তু বৃষ্টি পড়লে সমস্যা ঠিকই হয়। চট্টগ্রামবাসীর এই ভোগান্তি কখন শেষ হবে জানি না। হাজার হাজার কোটি টাকার জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সুফল কবে পাব, তা-ও জানি না।’
এদিকে, ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কায় দেশের চার সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে আবহাওয়ার বিশেষ সতর্কবার্তায় অধিদপ্তর বলেছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপক‚লের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বৃহস্পতিবারের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু মিয়ানমারের আকিয়াব উপক‚ল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং আরও অগ্রসর হওয়ার অনুক‚ল পরিবেশ রয়েছে। আর ২৬ মে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, আগামী ২৬ মে লঘুচাপটি সৃষ্টি হতে পারে। ২৯ বা ৩০ মের দিকে এটি আরও ঘণীভূত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ, নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে। মে মাস সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মাস হিসেবে পরিচিত। গত বছরের মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ সৃষ্টি হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। গত বছরের ২৬ মে এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে বাংলাদেশের উপকূলে। মাসের শেষে সম্ভাব্য লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে-এমন শঙ্কা আছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের। আর, নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।