চসিকের ৯০ শতাংশ কর্মীই অদক্ষ

42

সিটি কর্পোরেশনের ৯০ শতাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরই কাজে দক্ষতা নেই এবং তাদের অদক্ষতার কারণে সংস্থাটি নগরবাসীকে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন সদ্যবিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। তিনি বলেছেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে কর্পোরেশনে ১০ হাজারের মত জনবল রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত নয় হাজারই অদক্ষ। হোল্ডিং ট্যাক্স অটোমেশনে না আসা এবং অদক্ষ কর্মীদের কারণে নগরবাসীকে সিটি কর্পোরেশন নগরবাসীকে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না।
নগরীর একটি ক্লাবে গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি আগামীতে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ এবং হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আনার পাশাপশি সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতি বন্ধে নবনির্বাচিত মেয়রকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেছেন।
কর্পোরেশনের সদ্যবিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, গত ছয় মাস যুদ্ধ করেছি। এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের কাছ থেকে ভালোবাসা যেমন পেয়েছি, তেমনি অনেকের গালমন্দও শুনেছি। আর গণমাধ্যমের সহযোগিতা আমার চিরকাল মনে থাকবে। চসিকের সম্পত্তি পাবলিক প্রপার্টি। কিন্তু দুপুর ১২টায়ও অনেকে অফিসে আসেন না। আমি সোয়া নয়টায় গেট বন্ধ করে দিয়েছি তিন দিন। চসিকে দক্ষ জনবলের অভাব। জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম-বালাই নেই। দক্ষ জনবল চসিকের মত সেবাধর্মী সংস্থার জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ। পৌরসভা উন্নীত হয়েছে চসিকে। কিন্তু মানসিকতা পৌরসভাতেই আটকে আছে। পরিচ্ছন্ন বিভাগে অতিরিক্ত জনবল আছে। সবসময় কাজে নেই, হাজিরা আছে।
তিনি আরও বলেন, মাস শেষে বেতন খাতে সবমিলিয়ে ১৮ কোটি টাকা লাগে। আগামী মার্চ থেকে সেটা ১৯ কোটি টাকা হবে। জ্বালানি ও গ্যাসে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় হয়। আমার ডাকে পৌরকর বাড়াতে মানুষ সাড়া দিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ। হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য আপিল বোর্ড করে দিয়েছিলাম। আমি বলেছি- যা দিতে চায় নিয়ে নেন। হোল্ডিং ট্যাক্স অটোমেশনে আনতে পারলে আরও বেশি আদায় করতে পারতাম। চট্টগ্রামের মানুষ লাইনে দাঁড়াতে খুব বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। অনেক কর কর্মকর্তাকে বদলি করেছি, অডিট করিয়েছি। এদেও অনেকে ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স ফি আদায় করেও চসিকের বালামে তুলেনি। ব্যবস্থা নিতে কমিটি করে দিয়েছি। আমার বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পিসি রোড, যেটি খালের ভিতরে ছিল। এখানে অর্থের অভাব ছিলনা। দুইজন ঠিকাদার ছিলেন অদক্ষ। এর মধ্যে একজন জি কে শামীমের (কারান্তরীণ) পার্টনার। আমি কুমিল্লা থেকে তাকে ডেকে আনালাম। বললাম- কাজ শেষ না করে ফিরে যেতে পারবেন না। তার অনেক পাওনাদার ছিল। মানুষের কষ্ট আমি দেখেছি, দুঃসহ অবস্থা। এভাবে সড়কের পূর্বাংশ কমপ্লিট করতে পেরেছি।
সুজন নিজের অভিমত প্রকাশ করে বলেন, কাস্টম হাউসের আহরিত রাজস্ব থেকে চসিককে এক শতাংশ দিতে হবে। কেননা চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলে সমগ্র দেশের উন্নয়ন হবে। একেকটি কারখানা ইচ্ছে করলে চসিককে বছরে দুই হাজার ডলার দিতে পারে। সেই সামর্থ্য ও সুযোগ তাদের রয়েছে। এ জন্য দরকার হলে আইন করা হোক। রড ফ্যাক্টরির ইয়ার্ড কি শহরের রাস্তাঘাট?