চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে গাজা

1

পূর্বদেশ ডেস্ক

ইসরায়েলের অবরোধ ও টানা বোমাবর্ষণের কারণে চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে গাজা উপত্যকায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশু। জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, টানা তিন মাস ধরে মানবিক সহায়তা আটকে থাকা শিশুদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, শুধুমাত্র ২০২৫ সালেই অন্তত নয় হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগে চিকিৎসা নিয়েছে। মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ আরোপ করার পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, শিশুরা শুধু বোমায় নয়, খাদ্যের অভাবেও মারা যাচ্ছে। খাদ্য সহায়তা বন্ধ থাকায় এই ঝুঁকি আরও বাড়ছে। গত ২রা মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় কোনো ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। এতে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও খাদ্য সহায়তা চালু করেনি ইসরায়েল।
হামাস নেতা আবদেল রহমান শাদিদ অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারকে ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অবরোধ আন্তর্জাতিক আইন ও চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন।
বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা ওচঈ জানিয়েছে, গাজার প্রায় সব মানুষই চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ফিলিস্তিনি এনজিও পরিচালক আমজাদ শাওয়া জানান, শিশুদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ বা পুষ্টিকর খাবার কিছুই নেই। উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ আবু নাসির বলেন, শিশুরা বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন ও চর্বিসহ নানা পুষ্টি উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু গাজায় বিশেষ করে উত্তরে, এসবের কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক আদালতেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োআভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। গাজার এই সংকট বিশ্ব শান্তির জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং বিশ্বব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ সৃষ্টি করেছে।