লোহাগাড়া প্রতিনিধি
লোহাগাড়া উপজেলার ৪নং চরম্বা ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই মামলার আসামিকে। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন, ‘যারা ১৭ বছর আওয়ামী লীগ করে ৫ আগস্টের পরও তারা ক্ষমতার মসনদে থাকে কেমনে?’
গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম সাক্ষরিত একটি অফিস আদেশে দেখা যায়, লোহাগাড়ার ৪নং চরম্বা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে সৈয়দ হোসেনকে। কিন্তু জুলাইয়ের আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে লোহাগাড়া থানায় ২টি মামলাও রুজু করা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার তো দূরের কথা, উল্টো তিনি প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ায় অনেকেই আশ্চর্য হয়েছেন।
চরম্বার বাসিন্দারা বলছেন, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত হয়েছি। ৫ আগস্ট তাদের হাত থেকে দেশ মুক্ত হলেও এখনও কিছু কিছু জায়গায় তাদের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে এবং বিভিন্ন মাধ্যম ধরে পজিশন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। তারই একটি প্রমাণ চরম্বা ইউনিয়নের নবনিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন। আমরা এই আওয়ামী দোসরের অপসারণ চাই।
সৈয়দ হোসেনকে প্যানেল চেয়ারম্যান ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী লীগের তৎকালীন এমপি আবু রেজা নদভীর নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত আছে এমন ছবি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সাথে তার নানা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে সৈয়দ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মানুষ আমার নামে ষড়যন্ত্র করছে, আমি চরম্বা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। থানা কমিটির বর্তমান সদস্য। চরম্বা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।’ তার নামে লোহাগাড়া থানার ২টি মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে বা যারা মামলা দিয়েছে তারাই বলতে পারবেন কেন দিয়েছেন সেটা। তবে মামলা বাণিজ্য করার জন্যই এসব করেছে বলে আমি মনে করি।’ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতা মির্জা তামিম বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী স্বৈরাচারের কোনো দোসর এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারবে না। এটি হবে আমাদের শহিদদের সাথে সম্পূর্ণ গাদ্দারি। তাদের আত্মা শান্তি পাবে না যদি আওয়ামী লীগকে আবার পুনর্বাসন করা হয়। আমরা এটাও শুনেছি, এটি নাকি একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সুপারিশের মাধ্যমে হয়েছে। সুতরাং আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যে রাজনৈতিক দল গত স্বৈরাচারের দোসরের জন্য সুপারিশ করবে তারা শহিদের রক্তের সাথে বেঈমানি করবে এবং আমরা তাদের ক্ষমা করব না।’
এ ব্যাপারে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান জানান, ‘আমি এই ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি।’