চবি প্রতিনিধি
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনের বিরুদ্ধে ‘উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক’ পোস্ট দেওয়া সেই মুন্নির বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় মুন্নির বহিষ্কারের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। মুন্নিকে বহিষ্কার করা না হলে আমরণ অনশনের হুশিরারি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা উন্নয়ন কমিটি বরাবর একটি লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্নির সহপাঠী আহসান হাবীব লিয়ন বলেন, জুলাইয়ের বৈষম্যেবিরোধী আন্দোলনে মুন্নি ছাত্রলীগের দোসর হয়ে বিভিন্ন কর্মকান্ডে মৌনসম্মতি এবং আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সোস্যাল মিডিয়াতে হুমকি দিয়ে আন্দোলনকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করেছে। আমরা চাই, সে যেহেতু আন্দোলনে ফ্যাসিষ্টের দোসর হয়ে কাজ করছে, সে স্বাধীন বাংলায় এখন আমাদের সাথে কোনভাবে ক্লাস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমাদের একটাই দাবি মুন্নিকে ২৪ ঘণ্টার ভিতরে বহিষ্কার করতে হবে। যদি প্রশাসন বহিষ্কার না করে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব।
তার আরেক সহপাঠী দীপা মুহুরী বলেন, আন্দোলনের সময় সোস্যাল মিড়িয়াতে ফ্যাসিষ্টের দোসর হয়ে মুন্নি উস্কানিমূলক পোস্ট করেছে। যে ফ্যাসিস্টের দোসর হয়ে কাজ করতে পেরেছে। আমরা চাই সে আমাদের সাথে পরীক্ষা এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাকে অবশ্যই বহিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ‘সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলা উন্নয়ন কমিটি’র আহব্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমীন বলেন, এরকম একটি অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। আমরা ফ্যাক্ট চেকিংয়ের মাধ্যমে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর অভিযুক্ত মুন্নি প্রথম বর্ষের সমাপনীর ১০১ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা দিতে আসলে সহপাঠীরা পরীক্ষা বর্জন করে বিভাগের সভাপতির কক্ষের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় আন্দোলনের বিরুদ্ধে থাকা মুন্নি পরীক্ষায় বসলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। একইদিন আগে শিক্ষার্থীরা প্রক্টর বরাবর গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, স¤প্রতি সংগঠিত হওয়া ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন উস্কানিমূলক পোস্ট করেছিলো ওই ছাত্রী। যার ফলে ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাকে সেসময় বয়কট করেছিল। এছাড়া ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে ব্যাচের বাকিরা পরীক্ষায় বসবে না বলেও বিভাগকে অবগত করেছিল তারা। তবে পরবর্তীতে বিভাগের শিক্ষকদের অনুরোধে ওই ছাত্রীর ক্ষমা চাওয়া সাপেক্ষে পরীক্ষায় বসতে দিতে সম্মত হয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ওই ছাত্রী ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যাচের বাকি শিক্ষার্থীরা কোনভাবেই তার সাথে একই সাথে পরীক্ষায় বসতে রাজি হয়নি। ফলে সেদিনের ১০১ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করে বিভাগ কর্তৃপক্ষ।