চন্দনাইশে শুক্লাম্বর দীঘির মেলায় পুণ্যার্থীদের ঢল

1

চন্দনাইশ প্রতিনিধি

চন্দনাইশের বরমায় শুক্লাম্বর দীঘির মেলায় পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে। মনের বাসনা পূরণে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সনাতন ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ একসাথে স্নান করেন শুক্লাম্বর দীঘির শীতল জলে। এছাড়া ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় পুণ্যার্থীরা যে যার সাধ্যমত ছাগল, কবুতর, গাভীর দুধ, স্বর্ণালংকার দান ও প্রসাদ বিতরণ করেন।
গতকাল বরমার বাইনজুরী গ্রামে বসে এ মেলা। শুক্লাম্বর দীঘি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দর্শনীয় স্থান হিসাবে পরিচিত। এ দীঘিতে মানত করলে মনোবাসনা পূরণ হয় বলে তাদের বিশ্বাস। মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকাসহ ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকেও আসেন সনাতনী স¤প্রদায়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মানত করেন পীঠমন্দিরে।
জনশ্রুতি আছে, ভারতের নদীয়া থেকে ধর্ম প্রচারে আসেন শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য। তাঁর ধর্মদেশনা স্থানে দুশ বছর আগে থেকে এ মেলা শুরু করেন প্রয়াত নিত্যানন্দ বৈলয়। শুক্লাম্বর দীঘিকে কেন্দ্র করে পৌষ সংক্রান্তিতে এ মেলা প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন মেলা ছাড়াও বছরের প্রতিদিন কেউ না কেউ পীঠমন্দিরে মানত নিয়ে আসেন। তবে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ সংখ্যা বেশি থাকে।
স্থানীয়দের মতে, দুশ বছর আগে শুক্লাম্বর ভট্টাচার্য এ দীঘির পাড়ে বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দীর্ঘদিন ধ্যান মগ্নে থাকার পর তিনি ইহজগত ত্যাগ করলে, তাকে এ দীঘির পাড়ে সমাহিত করা হয়। তার সমাহিত স্থানে একটি অশ্বত্থ বৃক্ষ বিশাল জায়গা জুড়ে স্মৃতি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। পূজারীরা মনোবাসনা পূরণে এ অশ্বত্থ বৃক্ষের ডালেও সুতা বাঁধেন এবং কবুতর ছেড়ে দেন।
মন্দিরের জন্য মানত করা শত শত ছাগল বলী দেওয়া হয়। বিভিন্ন দান মন্দিরে উৎসর্গ করেন মেলায় আসা পূজারীরা।এছাড়া দীঘিতে মেলার দিনসহ বিভিন্ন সময়ে গাভীর দুধ ঢেলে দেন, স্নান করেন। দীঘির দক্ষিণ পাড়ে একটি শিবমন্দিরও রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ এসে এক মোহনায় মিলিত হন। এখানে দিনব্যাপী চলে পূজা-উৎসব। সে সাথে প্রত্যেকে স্ব-স্ব ধ্যানে মগ্ন থাকেন পূজা-অর্চনায়।
এদিকে মেলা পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌসী আকতার, সমাজসেবা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন, কর্মকর্তা রাসেল চৌধুরী, হারাধন দেব, বিজন ভট্টচার্য্য, অরুপ রতন চক্রবর্তী, ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী, নৃপেন্দু দত্ত, সুবল তালুকদার, অমল কান্তি ভট্টচার্য্য, পরিমল দেব, আশীষ দেব, পরিমল মহাজন, বিপ্লব চৌধুরী, রুবল দেব, ডা. কাজল কান্তি বৈদ্য, ভবশংকর ধর, রামপ্রসাদ ভট্টচার্য্য, কিরণ তালুকদার, বিধান দেব, টিংকু ধর, নারায়ন ধর, অধেন্দু দত্ত, বনবিহারী দেওয়ানজী, লিটন বিশ্বাস, সন্তোষ চৌধুরী, কানু দেব, সুজন দত্ত প্রমুখ।