চন্দনাইশে বেপরোয়া মাটি কাটা সিন্ডিকেট

1

চন্দনাইশ প্রতিনিধি

চন্দনাইশের জামিজুরী ও সাতবাড়িয়াতে স্কেভেটর দিয়ে রাত-দিন মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাটি দস্যুরা। কি এক অজানা কারণে প্রশাসন নিরব। উপজেলার জামিজুরী ও সাতবাড়িয়াতে রাতে ও দিনে সমানে ধানি জমির টপসয়েল ও জলাশয়ের মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে মাটি দস্যুরা। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন জামিজুরী এলাকার প্রবাসী জামাল উদ্দীন। স্থানীয়রা জানান, মাটি দস্যুদের সিন্ডিকেটের লোকজন উপজেলার আশে-পাশে, মাটি কাটার স্থানের সড়কের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয়। উপজেলা প্রশাসনের গাড়ি দেখলেই খবর দেয় তাদের সদস্যদের। বিফলে যাচ্ছে প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট। প্রতিদিন ভোর রাত পর্যন্ত এসব এলাকায় মাটি দস্যুরা স্কেভেটর দিয়ে ডাম্পারে করে ইটভাটা, বাড়ি ভিটায় নিয়ে যাচ্ছে মাটি।
স্থানীয়দের মতে, গত এক সপ্তাহ ধরে জামিজুরী এলাকায় জলাশয়ের মাটি কবরস্থানে দেয়ার কথা বলে ২ হাজার গাড়ির অধিক মাটি ভর্তি গাড়ি বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেয়। গত ২৪ জানুয়ারি সকাল থেকে ৮/১০টি ডাম্পারে করে মাটি নিতে দেখে স্থানীয়রা উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাথে ঘটনাস্থলে না গিয়ে বিকাল ৩ টায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) ডিপ্লোমেসি চাকমা ঘটনাস্থলে গিয়ে জলাশয় থেকে বিপুল পরিমাণ মাটি ধানি জমির উপর দিয়ে চার দিকে নিয়ে যাওয়ার চিহ্ন পান। তার যাওয়ার সংবাদ পেয়ে মাটি দস্যুরা জমিতে গাড়ির চাকার চিহ্ন মুছে ফেলতে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ শুরু করে। বিষয়টি শিকার করেছেন পাওয়ার টিলার চালক ও হেলপার বলেছেন, তাদেরকে ১ হাজার টাকা দিয়ে চাষ দিতে বলা হয়েছে। তিনি সরেজমিনে গিয়ে কয়েক হাজার মাটির গাড়ি নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েও কোন ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মাটি কাটা সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সর্বত্র দিন-রাত ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে। মাটি দস্যুরা কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বেপরোয়াভাবে স্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কেটে ডাম্পার করে ইটভাঁটা, পুকুর, ডোবা, নতুন বাড়ির জায়গায় মাটি ভরাট করছে। মাটি কাটায় নিয়োজিত ডাম্পার থেকে মাটি পড়ে সড়ক ধূলিময় হয়ে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিগত ১৫ বছর ধরে ১টি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় মাটি দস্যুরা সরব ছিল। ৫ আগস্টের পর পর নিজেরাই রাজনৈতিক দলের ছায়া পরিবর্তন করে পুনরায় মাটি কেটে যাচ্ছে প্রতিরাতে। ধানি জমির টপসয়েল কাটার পাশাপাশি উপজেলার পাহাড়ি এলাকার টিলা কেটে পরিবেশ ধ্বংস করছে।
চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন বলেছেন, মাটি কাটার সংবাদ পেলে যত রাতই হোক অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। প্রশাসন দিন-রাত মাটি কাটা সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলার একদিকে অভিযান পরিচালনা করলে তারা অন্যদিকে মাটি কাটে। এ পর্যন্ত মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে অর্থদন্ড, বিনাশ্রম কারাদন্ড, মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত স্কেভেটর, ড্রাম্পার, ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।