চন্দনাইশ প্রতিনিধি
চন্দনাইশের উপজেলার পাহাড়ি এলাকা জুড়ে ড্রাগন ফলের আবাদ চলছে। বাণিজ্যিকভাবে এ ফলের চাষাবাদ করে অনেকে লাভবান হচ্ছে।
এ সকল বাগান ঘুরে দেখা যায়, সারি সারি শোভা পাচ্ছে ড্রাগন ফলের গাছ। কোন কোন গাছে ফুল ফুটেছে। ফুল সাদা লম্বাটে এবং অনেকটা নাইট কুইনের মত। কিছু কিছু গাছে ফলও এসেছে। চাষীরা জানালেন, বছরের মে মাস থেকে নভেম্বর মাস ড্রাগন গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বাগান থেকে ২’শ থেকে ২’শ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক ড্রাগন ফল বিক্রি করেছে চাষীরা। মিষ্টি ও হালকা টক জাতীয় স্বাদের নানা পুষ্টিগুণে ভরা ড্রাগন ফল। গাছ লাগানোর ১ বছরের মধ্যে ফল আসা শুরু করে। ৩৫ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফল খাওয়ার উপযোগী হয়। সঠিকভাবে গাছের পরিচর্যা করলে দীর্ঘ সময় ধরে ফল পাওয়া যায়। ড্রাগন ফলে ভেষজ ও ঔষধিগুণ রয়েছে। এ ফল চাষের জন্য জৈব সার ছাড়া অন্য কোন সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না।
প্রায় এক শতাব্দী আগে থেকে শুরু হয় ড্রাগন ফলের চাষ এবং প্রসার। প্রায় সব ধরনের উঁচু মাটিতেই ড্রাগন ফলের চাষ করা যায়। তবে পাহাড়ের মাটি এই ফল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগি বলে জানালেন বিশেষজ্ঞরা। এপ্রিল-মে মাসে ফুল আসে, ২৫-৩০ দিনে ফুল ফলে পরিণত হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফুল ফোটা ও ফল ধরা অব্যাহত থাকে। কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা বলছেন, ড্রাগন ফল চাষ খুব সহজ। বাংলাদেশও ড্রাগন ফল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউ জার্মপ্লাজম সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. এম এ রহিম ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ড্রাগন ফলের প্রবর্তন করেন। তিনি এ ফলের জাত নিয়ে আসেন থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে। সে সব গাছ এখন দিব্যি ফল দিচ্ছে। এরই মধ্যে এ ফলের বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। বাউ ড্রাগন ফল-১ (সাদা) ও বাউ ড্রাগন ফল-২ (লাল) জাত বাংলাদেশে চাষাবাদ হচ্ছে। বীজ ও কাটিং পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের চাষ করা যায়। ড্রাগন চাষের জন্য কাটিংয়ের চারাই বেশি উপযোগি। কাটিং থেকে উৎপাদিত গাছে ফল ধরতে ১০ থেকে ১৭ মাস সময় লাগে। ড্রাগন ফলের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময় হলো জুন-জুলাই মাস। আমাদের দেশে মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। এ ব্যাপারে চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেছেন, পাহাড়ি এলাকা ড্রাগন চাষের জন্য উপযোগি। চন্দনাইশের হাশিমপুর, লট-এলাহাবাদ, ধোপাছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ড্রাগনের চাষ শুরু করেছে অনেকে। ড্রাগন ফল চাষ লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করার জন্য চাষীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।