চট্টগ্রাম বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবারের শরতে প্রকৃতির খামখেয়ালি আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সাগরে নিম্নচাপের উল্টোপিঠে বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ। তালপাকা ভাদ্রের শুরুতে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার পর শেষের দিকে এসে সাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে।
দু’দিন আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তরের তরফে জানা গিয়েছিল- পশ্চিম-মধ্য ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এবার জানা গেল, সেই লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর নিম্নচাপ নিয়ে গতকাল রবিবার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরসহ দেশের উপক‚লীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। বিদ্যমান এমন পরিস্থিতিতে সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের ৫ জেলা ও দুই বিভাগের উপর দিয়ে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভ‚ত হয়ে নিম্নচাপ আকারে একই এলাকায় অবস্থান করছে। গতকাল রবিবার সকাল ৬ টায় নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৭০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। নিম্নচাপটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভ‚ত পারে। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্য থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরসহ দেশের উপক‚লীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল রবিবার সকাল ছয়টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার জন্য প্রচারিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণও হতে পারে। নিম্নচাপ ও মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার মধ্যেও দেশের পাঁচ জেলাসহ দুই বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, টাঙ্গাইল ও ফরিদপুর জেলাসহ রংপুর ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া, আগামি দু’দিনসহ চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত সময়ে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে এবং তাপমাত্রা কমতে পারে।