নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী বিশেষ ট্রেনটি স্থায়ী করার পাশাপাশি আরও একটি নতুন ট্রেন চালুর প্রস্তাবনা দিয়েছে রেলওয়ে। এই ট্রেন জোড়ার প্রস্তাবিত নাম প্রবাল ও সৈকত এক্সপ্রেস রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত ট্রেনগুলো আটটি স্টেশনে যাত্রী উঠানামা করবে। গত ১১ ডিসেম্বর রেলওয়ের মহাপরিচালককে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রস্তাবনা সংক্রান্ত চিঠি দেন। এ ট্রেন দুটি চালু হলে এ রুটে দুই জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। আপাতত কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে বিরতিহীন আন্তনগর ট্রেনের পরিবর্তে এক জোড়া নতুন ট্রেন চালু করে যাত্রীর চাপ সামাল দিতে চাইছে রেলওয়ে।
পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তার দেয়া চিঠিতে বলা হয়, যাত্রী চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে এক জোড়া স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। এই ট্রেন স্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকার সামাজিক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা অনুরোধ জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি আরও এক জোড়া ট্রেন যোগ করে এখন দুই জোড়া ট্রেন পরিচালনার প্রস্তাব করা হলো।
রেলওয়ে জানায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলরত বর্তমান বিশেষ ট্রেনের নাম ‘সৈকত এক্সপ্রেস’ এবং নতুন ট্রেনের নাম ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ৭৪৩টি আসন থাকবে। ১৬টি কোচ নিয়ে ট্রেনগুলো চলাচল করবে। এতে যাত্রীর চাহিদা সামাল দেয়া সহজ হবে। রেলওয়ের নতুন প্রস্তাবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচলের সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমানে বিশেষ ট্রেনটি প্রতিদিন সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। কক্সবাজারে পৌঁছায় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। আবার কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। চট্টগ্রামে পৌঁছায় রাত ১০টায়।
প্রস্তাবিত দুই জোড়া ট্রেনের সময়সূচি অনুযায়ী, প্রথম ট্রেন চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছাড়বে সকাল সাড়ে ৬টায়। কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ১০টায়। ওই ট্রেন সকাল ১০টা ২০ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার স্টেশন ছেড়ে যাবে। এটি চট্টগ্রামে পৌঁছাবে বেলা সোয়া ২টায়।
চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে বেলা পৌনে তিনটায় আরেকটি ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। ওই ট্রেন কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে। কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা ৭টায় আবার ছাড়বে। সেটি চট্টগ্রাম স্টেশনে এসে পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১০টায়। ট্রেনগুলো যাত্রাপথে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামু স্টেশনে থামবে।
রেলওয়ে চট্টগ্রাস বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে নতুন ট্রেন দেয়া সম্ভব না হওয়ায় নতুন করে দুই জোড়া ট্রেন চালানোর প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এ রুটে যাত্রীর চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। প্রস্তাবটি অনুমোদন হলে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যে বিশেষ ট্রেন চলছে, তা দিয়ে দুই জোড়া ট্রেন পরিচালনা করা হবে। ট্রেন বাড়লে পর্যাপ্ত টিকিট মিলবে। এতে যাত্রীরাই উপকৃত হবে।
এর আগে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন চালু হলে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালু করা হয়। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন না দেয়ায় ক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে ঈদ স্পেশাল নামে একটি বিশেষ ট্রেন অস্থায়ীভাবে চালু করা হয়। এ ট্রেনে আয় বাড়লে কয়েকদফা ট্রেনটি চালুর সময়সীমা বাড়ানো হয়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেনটি স্থায়ী করতে চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, বিশিষ্টজনররা দাবি জানিয়ে আসছিল। অবশেষে রেলের শুভ বুদ্ধির উদয় হলো। এই দুই জোড়া ট্রেন চালু হলে চট্টগ্রাম কক্সবাজারসহ আশপাশের যাত্রীরা আরামে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটন নগরী।