নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন লাভ করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসার দ্বিতীয় স্যুয়ারেজ প্রকল্প। প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক-এর সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ‘চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (ক্যাচমেন্ট-২ ও ৪)’ শিরোনামে এ প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের কালুরঘাট-বাকলিয়াসহ নগরের পূর্বাংশ স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার আওতায় আসবে।
কালুরঘাটের হামিদচর এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পাঁচ হাজার ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পটির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। ওয়াসার স্যানিটেশন ও ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় চট্টগ্রাম শহরকে ৬টি ক্যাচমেন্টে ভাগ করা হয়। প্রণীত প্ল্যানের সুপারিশ অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ওয়াসার প্রথম স্যুয়ারেজ প্রকল্পের জোন-১ এর কাজ শুরু করে ওয়াসা। এরপর অন্য ৫টি ক্যাচমেন্টের মধ্যে ২ ও ৪ নিয়ে আরেকটি স্যুয়ারেজ প্রকল্প তৈরি করে সেবা সংস্থাটি। কালুরঘাটের হামিদচর এলাকায় প্রকল্পের মূল স্থাপনা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে। এটির দৈনিক ধারণক্ষমতা হবে ৬০ হাজার ঘনমিটার। প্রকল্পের অধীনে প্রধান স্যুয়ারেজ লাইন নির্মাণ করা হবে ১১ কিলোমিটার, শাখা স্যুয়ারেজ লাইন ৭০ কিলোমিটার এবং সার্ভিস লাইন হবে ৭০ কিলোমিটার। প্রকল্পের আওতায় ৯৩২টি ম্যানহোল এবং গৃহ সংযোগ ও ক্যাচপিট নির্মাণ হবে ১৪ হাজার করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জামালখান, চকবাজার, চান্দগাঁও, মোহরা, শুলকবহর ও ষোলশহরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।
জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসা যৌথভাবে প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জাইকা দেবে ৪ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা, বাংলাদেশ সরকার ৯৬৯ কোটি টাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসা বহন করবে ৩৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য বাকলিয়া মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত এলাকায় ৭৪ একর জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। একনেকে অনুমোদনের পর ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হবে।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রথম সুয়্যারেজ প্রকল্প ক্যাচমেন্ট-১ এর কাজ চলমান আছে। এ প্রকল্প থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ লাখ নাগরিককে স্যুয়ারেজের সুবিধা পাবে। এর মধ্যে ১০ লাখ এসটিপি (সরাসরি পাইপলাইন) এবং ১০ লাখ ফিকেল ¯ø্যাজ ম্যানেজমেন্টের (বর্জ্য সংগ্রহ) আওতায় আসবে। এর মধ্যে এসটিপি দৈনিক ১০ কোটি লিটার এবং এফএসটিপিতে ৩০০ টন পানি পরিশোধন করা সম্ভব হবে। অন্যদিকে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে ক্যাচমেট-৩ (ফতেয়াবাদ) এরিয়ায় কারিগরি কাজ চলমান আছে। ক্যাচমেট-৫ (উত্তর কাট্টলী) এফডিএ’র মাধ্যমে কারিগরি কাজ চলমান আছে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) মডেলের আওতায় ক্যাচমেন্ট-৬ (কাস্টমস মোড়) এরিয়ার কাজ করার সিদ্ধান্ত আছে।