নিজস্ব প্রতিবেদক
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সংগঠন ‘ডট গ্যাং’ এর দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নগরীর ওয়াসা মোড়ের একটি ভবনের ৫ তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬ ছাত্র আহত হন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়াসা মোড়ের একটি অফিসে মিটিং করছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদসহ অন্য সমন্বয়করা। পরে সেখানে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ‘ডট গ্যাংয়ের’ সদস্যরা। এ সময় ডট গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয় ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকা সাদিক আরমান।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তানভীর শরীফ বলেন, ‘লিফলেট বিতরণের কর্মসূচিতে মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ চট্টগ্রামে আসেন। কর্মসূচির পর ওয়াসা মোড়ের বিপরীতে অবস্থিত একটি ভবনে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয় হান্নান মাসউদ, রাসেল আহমেদ, আরিফ মঈনুদ্দিন, সাইফুর রুদ্রসহ অন্য সমন্বয়কদের। আমাকে উপর্যুপরি কিল ঘুষি মেরে, পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার করে সাদিক আরমানের নেতৃত্বে ডট গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ সময় আহত হন বেশ কয়েকজন। ভাঙচুর করা হয় অফিসটি। খবর পেয়ে ওমর ফারুক সাগরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা ভবনটিতে গিয়ে অবরুদ্ধ সমন্বয়কদের উদ্ধার করেন।’
এদিকে রাত সাড়ে আটটার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন সমন্বয়ক রিজাউর রহমান ও সহ সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির প্রশ্রয়ে ডট গ্যাং এ আস্ফালন দেখিয়েছে। জুলাই আন্দোলনে আহত ওমর ফারুক সাগরের ওপর আবারও হামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন আহত সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর। সাগর নিজেই হামলার জন্য দায়ী করেন ডট গ্যাংকে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার হওয়া ডট গ্যাং ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ভোল পাল্টে সমন্বয়কদের সাথে ভিড়তে শুরু করেন। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর। তারা আজকে মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ ও আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সমন্বয়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ, সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী, সাইফুল ইসলাম রুদ্র, সিয়াম ইলাহী। তারাও হামলার জন্য দায়ী করেন ডট গ্যাংয়ের সদস্যদের।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে খান তালাত মাহমুদ রাফি ও রিজাউর সেখানে উপস্থিত হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। এসময় রাফি ও রিজাউরকে উদ্দেশ করে ‘ভুয়া ও চাঁদাবাজ’ ¯েøাগান দেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, যারা ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনের নিচে দুই পক্ষ অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে রাত নয়টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে উপস্থিত হয় প্রেস ক্লাব এলাকায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।