চট্টগ্রামে যুবদলের তিন কমিটি ঘোষণা শীঘ্রই

24

 

আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রগামী ভ‚মিকা রেখে বেশ প্রশংসিত চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল। নিজেদের মধ্যে শৃঙ্খলাও ফিরিয়ে এনেছিল। রাজধানীর পরের অবস্থানে থাকা চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। এই তিন জেলা কমিটি পুনর্গঠনে শীর্ষ দুই পদে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। এ নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার পর এবার সাক্ষাৎকার নেবে কেন্দ্র। সাক্ষাৎকারের পর চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক জেলা যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল বলেন, শীর্ষ দুই পদে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছিল। পিডিএফ আকারে এসব জীবনবৃত্তান্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে। কতগুলো জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে, তা জানাতে একটু সময় লাগবে। পিডিএফ ফাইল আকারে থাকার কারণে সেগুলো এক জায়গায় আনতে হবে। তারপর প্রকৃত সংখ্যা জানা যাবে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যেদিন বৈঠক করবেন, সেদিনই প্রকৃত সংখ্যা জানানো যাবে।
তিনি আরও বলেন, যারা জীবনবৃত্তান্ত দিয়েছেন, তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। তাদের দলের জন্য কি অবদান ছিল, সেই বিষয়টি মূল্যায়ন করা হবে। বিগত সময়ে তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে জানানো হবে। কিছু জেলার প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সাক্ষাৎকার এই মাসেই হতে পারে।
চট্টগ্রামের মহানগর, উত্তর এবং দক্ষিণ জেলার যুবদল পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কেন্দ্র তৃণমূল থেকে নতুন নেতৃত্ব তুলে আনার পরিকল্পনা করেছে। সংগঠনের শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করতে দলটি পূর্ণগঠন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর ও গতিশীল করতে চায়। এই তিন জেলার শীর্ষ দুই পদের জন্য বিপুল সংখ্যক প্রার্থী জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান ও সাবেক সভাপতিদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এতে বর্তমান এবং সাবেক সভাপতি বা আহব্বায়কদের নতুন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে তিনটি জেলাতেই নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। সাক্ষাৎকার ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শেষে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বা আহব্বায়ক-সদস্য সচিব পদে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে। এতে চট্টগ্রামের তিনটি জেলার যুবদল নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় যুবদলের সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো কি পরিমাণ জীবনবৃত্তান্ত পড়েছে সেটা গণনা করিনি। গণনার করার পর বলা যাবে।আনুমানিক করে কোনো তথ্য আমরা দিতে চাচ্ছি না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভাপতিরা বিএনপিতে চলে যাক সেটা আমরাও চাই। তবে কাউকে জীবনবৃত্তান্ত জমা না দিতে আমরা বলিনি। সভাপতিদের পুনরায় সুযোগ দেয়া হবে না এমনটাও না। কোথাও কোথাও দেয়াও হচ্ছে। আর চট্টগ্রামের বিষয়টি ভিন্ন। চট্টগ্রামে সভাপতি-সাধারন সম্পাদকের উপর সবাই সন্তুষ্ট আছে। এখন দেখা যাক কি হয়।
সাক্ষাতকার প্রক্রিয়াতেও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনছে যুবদল। জীবনবৃত্তান্তে দেয়া তথ্যের যাচাই-বাচাইও করছে দলটি। গত শনিবার ফরিদপুর জেলা পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নেয় কেন্দ্র। এসময় তথ্য গোপন করেন ফরিদপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম। সদর উপজেলার আম্বকাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার তথ্য গোপন করায় ফরিদপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলমকে প্রাথমিক সদস্য পদ সহ দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৩ জানুয়ারি যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের শীর্ষ দুই পদে পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে। তিনদিনের মধ্যে দপ্তর সেলে এসব জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।
যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভ‚ঁইয়ার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা যুবদলের আহŸায়ক ও সদস্য সচিব পদে আগ্রহী প্রার্থীদের ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেদের ভ‚মিকা সম্পর্কিত তথ্যসহ পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক বৃত্তান্ত পিডিএফ ফাইল আকারে আগামী তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দিতে হবে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও নূরুল ইসলাম নয়ন এ সিদ্ধান্ত নেন। এর আগে, ২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেন দীপ্তিকে সভাপতি ও মুহাম্মদ সাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। চার মাস পর ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।