চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা আজিম হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা পর্যায়ে মাসব্যাপী জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদানের মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও কর্ণফুলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যৌথভাবে এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করে। কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজনীন সুলতানা, উপজেলা জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমওডিসি ডা. শাহাদাত হোসেন ও চরপাথরঘাটা আজিম হাকিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মঞ্জুর আলম। এসময় সিভিল সার্জন কার্যালয় ও উপজেলা জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে সারাদেশের মতো বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন। আগামি ২১ নভেম্বর এ ক্যাম্পেইন সম্পন্ন হবে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া মোট ১৮ দিনের প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জেলার ১৫ উপজেলার ৪ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম-৯ম শ্রেণির ১০-১৪ বছর বয়সী ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩০ জন কিশোরী ও স্কুল বহিভর্‚ত কমিউনিটির ১০-১৪ বছর বয়সী ৭ হাজার ৫১৮ জন কিশোরীসহ সর্বমোট ৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৮ জন কিশোরীকে এইচপিভি ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কিশোরীদেরকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ব্যয়বহুল এইচপিভি টিকা প্রদান করা হচ্ছে। ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন ও জন্মনিবন্ধনবিহীন কিশোরীদেরকে হোয়াইট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ক্যাম্পেইনের প্রথম ১০ দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রসমূহে এবং পরবর্তী ৮ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী কেন্দ্রসমূহে কিশোরীদেরকে এইচপিভি টিকা দেয়া হবে। এ ভ্যাকসিনে কোনো ধরণের ঝুঁকি বা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এইচপিভি ভ্যাকসিনের অপপ্রচার বা গুজব রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা জান্নাত বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে এইচপিভি টিকা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত, নিরাপদ ও কার্যকর। এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিলে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে। এটি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবার এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছে। এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সারাদেশে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। ১০-১৪ বছর বয়সী কোনো কিশোরী কেউ যাতে এ টিকা থেকে বাদ না পড়ে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। ইপিআই ভ্যাকসিনের মধ্যে এইচপিভি সবচেয়ে দামী। এবারের লক্ষ্য হলো ৯৫ শতাংশ কিশোরীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা। বিজ্ঞপ্তি