চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা শুরু কাল

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরানো ঠিকানায় ফিরেছে চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে হবে এবারের বইমেলা। ২০১৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে জিমনেশিয়াম মাঠে মেলা আয়োজন হলে প্রশাসনিক অনুমতি না থাকায় গতবার সিআরবিতে মেলা হয়েছিল। পুরানো জায়গায় ফিরে আসায় লেখক প্রকাশকরা উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশেনের আয়োজনে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ আয়তন নিয়ে শুরু হচ্ছে এ মেলা। মেলার সময়ও বেড়েছে পাঁচদিন। তবে, এবারের মেলায় স্টল কমেছে ১৫টি। এসব নিয়ে কাল থেকে শুরু হচ্ছে প্রথমবারের মত ২৬ দিনব্যাপী চট্টগ্রাম অমর একুশে বইমেলা।
মেলার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এবার মেলার জন্য ১ লাখ বর্গফুট জায়গা তৈরি করা হয়েছে। যা গতবার ছিল ৪৩ হাজার বর্গফুট। গতবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার ১৫৫টি স্টল ছিল। এর মধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি, সিঙ্গেল ৭৭টি। এবারের মেলায় স্টল রাখা হয়েছে ১৪০টি। এদের মধ্যে চট্টগ্রামের স্টল ৭৪টি ও ঢাকার স্টল ৪৪টি। ডাবল স্টল ৩৩টি, সিঙ্গেল ৭৪টি। তবে ৫ দিন বেড়ে এবারেই প্রথম ২৬ দিনব্যাপী বইমেলা হচ্ছে।
প্রতিবারের মতো এবারও মেলায় থাকছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ ও সেলফি কর্নার। এছাড়াও নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার জন্য ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার আন্দোলনের উপর প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম চত্বরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় এবারের বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
এ সময় মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকার অভিজাত প্রকাশনী সংস্থাগুলোকেও স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক লাখ বর্গফুটের মাঠজুড়ে ১৪০টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের স্টল সংখ্যা ৭৪টি এবং ঢাকার স্টল সংখ্যা ৪৪টি। ঢাকা থেকে আরো প্রকাশনা সংস্থা স্টল চেয়েছিল। কিন্তু আমরা বলেছি, আগে চট্টগ্রামের প্রকাশনা সংস্থাকে দেওয়া হবে, তারপর আপনাদের দেওয়া হবে। তাই তাদের সবাইকে দিতে পারিনি।
আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন গৃহায়ণ, গণপ‚র্ত ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এবার মেলায় থাকছে দৃষ্টিনন্দন শহীদ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার। মেলা কার্যালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকবে। এছাড়াও নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত থাকবে। মেলার নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সার্বিক সহযোগিতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের লেখক-প্রকাশক-পাঠক এবং নাগরিক সমাজের দীর্ঘকালের আকাক্সক্ষা ছিল ভাষার মাসে বইমেলা আয়োজনের। সম্মিলিত উদ্যোগে একটি বইমেলার আয়োজন ছিল চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আকাক্সক্ষা। আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেকেই আজকাল মোবাইলে ও মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। সময়, অর্থ, স্বাস্থ্য সবই শেষ করছে এর পেছনে। এতে তারা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বই অন্যতম বন্ধু যা তাদের মোবাইল ও মাদকের আসক্তি থেকে বের করে সৃজনশীল মেধাবী প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। এ ক্ষেত্রে মা-বাবা, শিক্ষক ও সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। বইমেলা আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করা আমাদের ওপর এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এছাড়াও জাতীয় জীবনে যেসব ব্যক্তি কৃতিত্বপ‚র্ণ অবদান রেখেছেন তাদের একুশে সম্মাননা স্মারক পদক ও সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হবে।