নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেছেন, ঢাকায় আমাদের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। চট্টগ্রামে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। ঢাকা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে চট্টগ্রামে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বাজার কার্যক্রম তদারকি জোরদার করা হবে। সার্ভিলেন্স টিমের অভিযানগুলো আরও বাড়ানো হবে।
গতকাল রবিবার স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তা ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আগ্রাবাদে বিএসটিআই বিভাগীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএসটিআই মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম বলেন, ঢাকা রাজধানী হলেও চট্টগ্রাম সবদিক থেকে অন্যতম। বন্দরের কারণে চট্টগ্রামের স্থান আলাদা। দেশের সব জায়গা থেকে সকল কাজে ঢাকায় যাওয়া হয়। আর আমদানি-রপ্তানির প্রায় পুরোটা হয় চট্টগ্রাম থেকে। এই চট্টগ্রামে বিএসটিআইয়ের পূর্ণাঙ্গ ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। বিএসটিআইয়ের সেবাকে আরো জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সেবা পেতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর আহবান জানিয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, বিএসটিআই কর্মকর্তারা নাকে খত দিয়ে চাকরি নিয়েছেন, সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে। নাগরিক সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের হয়রানি করা চলবে না। যদি সেবা দিতে না পারেন তাহলে চাকরি ছেড়ে দেন। সেবা প্রদানে গতিশীলতা আনয়নের পরামর্শ জানানোর অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় আমাদের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। চট্টগ্রামে কোন ম্যাজিস্ট্রেট নেই। চট্টগ্রামে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বাজার কার্যক্রম তদারকি করার ব্যবস্থা করা হবে। সার্ভিলেন্স টিমের অভিযানগুলো আরো বাড়ানো হবে।
সভায় ক্যাব, চট্টগ্রামের সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি অবৈধ ও নি¤œমানের ইলেকট্রিক পণ্য, পোট্রোল পাম্প, ওজনে কারচুপি ও কসমেটিক সামগ্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিয়মিত বাজার তদারিক ও বিএসটিআই’র নবনির্মিত ভবনে প্রধান কার্যালয়ের ন্যায় সকল পণ্যের পরীক্ষণের সুবিধা সৃষ্টির অনুরোধ জানান। এছাড়া চট্টগ্রাম বিএসটিআই কার্যালয়ে মহাপরিচালকের জন্য একটি কক্ষ বরাদ্দ রাখা এবং সপ্তাহে অন্তত একদিন যেন মহাপরিচালক চট্টগ্রামে অফিস করেন সে অনুরোধ জানান।
সভায় ছাত্র সমন্বয়কের প্রতিনিধি আবু হানিফ নোমান বাজার সার্ভিল্যান্সের মাধ্যমে ওজন যন্ত্রের ভ্যারিফিকেশ ও বাজার মনিটরিং জোরদার করার আহবান জানান।
এছাড়া ক্যাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, চিটাগাং ড্রিংকিং ওয়াটার ওয়ানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সল আবদুল্লাহ আদনান, বনফুলের জিএম আনামুল আলমসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় মহাপরিচালক জানান, স্টেকহোল্ডারদের বিভিন্ন চাহিদার প্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যেই বিএসটিআই চট্টগ্রামে নবনির্মিত ১০ তলা ভবণ চালু এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে অত্যাধুনিক পরীক্ষণ যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ ল্যাব স্থাপন করার মাধ্যমে সকল পণ্যের পরীক্ষা চট্টগ্রামে করা হবে। বিগত এক বছরে কসমেটিক পণ্যের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৯৮ মামলা দায়ের, ৩৭,১০,০০০ টাকা অর্থদন্ড, ১টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা ও একজনকে কারাদÐ প্রদান করা হয়েছে। সর্বোপরি ভোক্তা সাধারণ, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ীসহ আপামর সকলের নৈতিকতার উন্নতি ঘটানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
চট্টগ্রাম বিএসটিআইয়ের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সভায় আগত স্টেকহোল্ডার ও অতিথিগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বচ্ছাতা ও জবাবদিহিতামূলক সেবা প্রদান, ব্যবসীয় ও শিল্প উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
মতবিনিময় সভায় বিএসটিআই’র মো. নূরুল আমিন, পরিচালক (সিএম), প্রকৌ. নুরুল ইসলাম, পরিচালক (প্রশাসন) গাজী নূরুল ইসলাম, পরিচালক (রসায়ন), মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন সরকার, উপপরিচালক (সিএম) উপস্থিত ছিলেন।