চকরিয়া প্রতিনিধি
অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে আবারও ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর শহরের বাণিজিক জনপদ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়ক। এসব সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে এখন থেকে বিশেষ নজরদারিতে থাকবে পৌর এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আরকান মহাসড়ক, পৌরশহরের বিপনী বিতান, হাসপাতাল ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অলিগলি। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে পৌর শহরের দৈনন্দিনের এসব চিত্র ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এর আগে ২০১৫ ও ২০১৯ সালে চকরিয়া পৌর শহরের মার্কেটের ভেতরে পৃথক দুইটি খুনের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মিডিয়ায় ফলাওভাবে প্রকাশিত হলে পরবর্তীতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তারপর থেকে চকরিয়া বাণিজ্যিক শহরের বিপনী বিতান ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমুহ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকার বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সনাক্ত করার পর উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও পৌর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে পৌর শহরের বাণিজ্যিক জনপদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে পৌর শহরের জমজম হাসপাতাল থেকে পৌর বাসটার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৬৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। স্থাপিত এসব সিসি ক্যামেরা বেশ কিছুদিন সচল থাকলেও পরবর্তীতে সঠিক মনিটরিংয়ের অভাবে এসব একের পর এক অকেজোঁ হয়ে পড়ে। আবার ২০টির মতো সিসি ক্যামেরা চুরি হয়ে যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে চকরিয়া পৌর শহরে বেশ কয়েকটি অপরাধ সংঘটিত হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী ও পৌরবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনকে অবহিত করা হলে পৌর শহরে অপরাধ প্রবণতা ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূর্বের স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসমূহ পুনরায় সচল এবং ২০টি নতুন সিসি ক্যামেরা প্রতিস্থাপন করা হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চকরিয়ায় বখাটে, টোকাই, ছিনতাইকারী, উত্ত্যক্তকারীসহ অপরাধীদের উৎপাত বন্ধ করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা ও থানা প্রশাসন। আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন পৌরসভা কর্তৃপক্ষও। এরই অংশ হিসেবে পৌরশহরের চিরিঙ্গার মাতামুহুরী সেতু থেকে পৌর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মহাসড়ক, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তথা হাসপাতাল, কলেজ, বিদ্যালয়, বিভিন্ন বিপনীবিতানসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ককে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নানা অপরাধমূলক কর্মকাÐ অনেকাংশে রোধ হওয়ার পাশাপাশি দুর্বৃত্তরা অপরাধ কর্মকান্ড করে আর পার পাওয়ার সুযোগ পাবে না।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, চকরিয়া পৌর সদরের নিরাপত্তা বিবেচনায় মহাসড়কের মাতামুহুরী সেতু থেকে পৌর বাস টার্মিনাল পর্যন্ত এবং পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ওয়াপদা রোড, বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ, সবুজবাগ, আবাসিক মহিলা কলেজ, সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ বিপনী বিতানগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। বিশেষ করে পৌরশহরের বিভিন্ন মার্কেট, ব্যাংক, বিপনি-বিতান, সড়ক, উপ-সড়কের কোনো পয়েন্টে চুরি, ইভটিজিং, ছিনতাইয়ের মতো যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই তা সাথে সাথে সিসি ক্যামেরার আওতায় চলে আসবে।