চকরিয়া থানার ওসিসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

1

চকরিয়া প্রতিনিধি

হত্যা ও পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ভূইয়াসহ ৫৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দুইটি দায়ের করেন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার কক্সবাজাস্থ প্রতিবেদক মনছুর আলম মুন্না ও ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা আকতার হোছাইন।
তৎমধ্যে মনছুর আলম মুন্নার দায়ের করা মামলায় চকরিয়া থানার ওসিকে প্রধান আসামি এবং ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী মুক্তি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও স্টেশনের পাশে আবদুর রশিদ নামে এক জামায়াত কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই আকতার হোসেনের দায়ের করা মামলায় ওসি মঞ্জুর কাদের ভূইয়াকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। এছাড়া পৃথক মামলায় অপর একজন পুলিশ পরিদর্শক, দুইজন উপপরিদর্শক (এসআই) একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চার পুলিশ কনস্টেবলসহ ৫৯ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ ছাড়া অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
আদালতে দায়ের করা মামলায় বাদি মনছুর আলম মুন্না দাবি করেন, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে অসদাচরণ, ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জনসাধারণকে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠে। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে তার উপর ক্ষেপে গিয়ে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেন ওসি মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া। তারই সূত্র ধরে গত ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে মামলার প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ কক্সবাজার শহরের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিসে গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায়। উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ঈশান, এসআই সোহরাব সাকিব ও এএসআই পারভেজসহ ৪ জন কনস্টেবল এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। বাদি আরও দাবি করেন, অভিযানের সময় পুলিশ দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকা অফিসে রক্ষিত ২টি ল্যাপটপ, ৪টি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যায়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করে আসামিরা। এভাবে একদিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে চালান দেন মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া।
বাদির আইনজীবী এডভোকেট সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে অপর মামলাটি দায়ের করেন ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের অলিয়াবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে আকতার হোছাইন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও স্টেশনের পাশে জামায়াতকর্মী আবদুর রশিদের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয় ওই সময়ের ওসি/ডিবি একেএম মনজুর আলমকে। মামলায় দুই নম্বর আসামি করা হয় তৎকালীন ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) ও বর্তমান চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়াকে। এ মামলায় ৫১ জনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে পুলিশ ছাড়া অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী আমির হোছেন জানান, বাদির দায়ের করা মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।