চকরিয়ায় ১৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্য

1

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বোরো আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। এ বছর বোরো মৌসুমে ১৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকার কৃষকগণ। আবার কোন কোন এলাকায় বোরো আবাদের জন্য কৃষকরা তাদের জমিকে আবাদযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছেন।
চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীর পালাকাটা ও বাঘগুজারা পয়েন্টে স্থায়ীভাবে নির্মিত দুইটি রাবার ড্যামের ফুলানো পানি এবং নদীতে শ্যালো মেশিন বসিয়ে মিঠাপানি তুলে অবাধে চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। নদীতে এবারে মিঠাপানির প্রবাহ বেশি এবং আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা সহজেই পূরণ হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলার হারবাং, বরইতলী, কৈয়ারবিল, লক্ষ‍্যারচর, কাকারা, সুরাজপুর-মানিকপুর, বমু বিলছড়ি, ফাসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, চিরিংগা, সাহারবিল, বিএমচর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, বদরখালী ও চকরিয়া পৌর এলাকায় পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো আবাদ। এসব জমিতে কৃষকরা ব্রি-ধান ৯২, ৭৪, ৮৭ ও ১০০ জাতের চারা রোপণ করছেন। বেশ কিছু কৃষক জানিয়েছেন, উফশি জাতের ধান থেকে হাইব্রিড জাতের ধানের ফলন বেশি। তাই তারা হাইব্রিড জাতের ধানের চাষেই বেশি আগ্রহী।
চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের উপরপাড়া এলাকার কৃষক রুহুল আমিন বলেন, তিনি জমির মালিকের কাছ থেকে ২ একর জমি অগ্রিম লাগিয়ত নিয়ে চাষাবাদ করছেন। ইতিমধ্যে এসব জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে সেচের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণের উপযোগি করে তুলেছেন। এরপর শ্রমিক দিয়েই তিনি এসব চারা রোপণ করবেন। কৃষক রুহুল আমিন আরও বলেন, গ্রামীণ জনপদের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ছড়া খালে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ কম থাকায় জমিতে সেচের পানির সমস্যা একটু বেশি। সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে কৃষকদের নিজস্ব উদ্যোগে ছড়াখালে অস্থায়ী মাটির বাঁধ দেয়া হয়েছে। তারপর আটকানো পানিতে শ্যালো মেশিন বসিয়েই চাষাবাদ করছে কৃষক। এতে প্রতি কানি (৪০ শতক) জমিতে সেচ খরচ বাবদ দিতে হয় ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে। এ বছর আমি বিআর ব্রি-ধান ৭৪ জাতের ধান রোপণ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কৃষক রুহুল আমিন।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস এম নাসিম হোসেন বলেন, এ বছর চকরিয়া উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এ বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা চলছে। জমিতে কৃষকরা ব্রি-ধান ৯২, ৭৪, ৮৭ ও ১০০ জাতের চারা রোপণ করছেন। তিনি আরও বলেন,এ বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবং মাতামুহুরী নদীতে মিঠা পানির প্রবাহ ভাল থাকায় বোরো আবাদের লক্ষ‍্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি ভাল ফলনেরও আশা করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।