চকরিয়ায় হাতির আক্রমণে গৃহবধূর মৃত্যু

1

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে ইসমত আরা (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূ ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ছাইরাখালী জলদাস পাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলমগীরের স্ত্রী। তিনি চার সন্তানের জননী ছিলেন। বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হওয়ার পরপরই স্থানীয় লোকজন গৃহবধূ ইসমত আরাকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে নিহত গৃহবধূর স্বামী মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, সোমবার রাতের খাবার শেষে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন আমার স্ত্রী ইসমত আরা। এ সময় আমি বাড়ির বাইরে ছিলাম। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আমাদের বাড়ির পালিত কুকুর চিৎকার শুরু করলে বাড়িতে অবস্থানরত সকলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এ সময় একটি বড় সাইজের হাতি বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে আমার স্ত্রী ইসমত আরাকে হামলা করে। তাকে আছড়ে হত্যার পর হাতিটি বের হয়ে যায়। তবে এ সময় আমার স্ত্রীর পাশে থাকা আমার চার সন্তানকে কোনো ধরনের আক্রমণ করেনি হাতিটি। আমি বাড়ি ফেরার পর বড় দুই সন্তান তাদের মাকে হাতি মেরে ফেলার বিষয়টি আমাকে অবগত করেন।
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে এক গৃহবধূ নিহত হওয়ার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমানসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন এলাকায় পলিথিনের বেড়া দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী কুড়ে ঘরেই রাতের আঁধারে হাতির আক্রমণের শিকার হয় ওই গৃহবধূ। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।
রেঞ্জ কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনাস্থলটি বন্যহাতির বিচরণ এলাকা। তারপরও বন্য হাতির আক্রমণের শিকার হওয়ার বিষয়টিকে তোয়াক্কা না করে কতিপয় লোক সামাজিক বনায়নের ভেতরে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিল। যে কারনে কোনো না কোনো সময় বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। হাতি বিচরণের এলাকায় জনসমাগম এড়াতে জনসচেতনতা বাড়ানো দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।