চকরিয়ায় বাড়ি নির্মাণকাজে চাঁদাবাজদের হামলা, নারীসহ আহত ৬

1

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নে পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি নির্মাণের সময় চাঁদা দাবি করে গৃহ নির্মাণকাজে বাঁধা ও হামলা চালিয়েছে কতিপয় চাঁদাবাজ চক্রের লোকজন। সন্ত্রাসীরা নিরীহ ওই পরিবারের বসত বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় চাঁদাবাজচক্রের ধারালো কিরিচের আঘাতে ও হাতুড়িপেটায় ওই পরিবারের নারীসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়। ঈদের দুইদিন পর গত ১০ জুন মঙ্গলবার দুপুরে বরইতলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উপর পাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের বাড়িতে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলার এক পর্যায়ে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ অভিযোগ জানালে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ হারবাং ফাঁড়ির পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে হামলাকারী চাঁদাবাজচক্র উল্টো আক্রান্ত পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির পাশাপাশি তাদের বাড়িভিটা জবরদখল করে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। রবিবার (১৫ জুন) বিকালে চকরিয়া পৌরশহরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চাঁদাবাজচক্রের হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় বিস্তারিত তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্তা সাইফুল ইসলাম। আহত সাইফুল ইসলাম জানান, বরইতলী মৌজার বিএস ১৬৬৫ নম্বর খতিয়ানের মালিক আমার দাদী আফিয়া খাতুনের ওয়রিশ হিসেবে ওই জমিতে বাড়িঘর তৈরি করে শতবছর ধরে আমরা বংশ পরস্পরায় পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। গত ১০ জুন দুপুরে পুরানো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় শামসুল আলম, আশেক গং নানা উপায়ে বাড়ি নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তাদের চাঁদা দিতে অপরগতা প্রকাশ করায় ২০/২৫ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ জোরপূর্বক আমাদের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ হামলায় গুরুতর আহত হন পরিবারের গৃহকর্তা সাইফুল ইসলাম, তার ভাই মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল, বোন সাবেকুন নাহার, ছাদেকুল জন্নাত, খালেদা বেগম, নারগিস পারভীন, শাহেদা বেগম। আহত সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, আমার বাড়িতে ঢুকে হামলা, আমার ভাই-বোন ও স্ত্রীর উপর আক্রমণ চালিয়ে সন্ত্রাসী মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, লোহার রড ও সিমেন্টসহ প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পুরো হামলার ঘটনাটি হারবাং ফাঁড়ি পুলিশের উপস্থিতিতে।
গৃহকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন স্থানীয় মকবুল আলীর ছেলে ছলিম উল্লাহ (৬০) ছলিম উল্লাহর ছেলে মো. মিজান (৪৫), মো. সেকাব (৩২), জিবরান মোহাম্মদ আশেক (২৫), মো. কাইসার (৪০), সিরাজুল হকের ছেলে মো. নাছির উদ্দিন (৩৮) আনোয়ার হোসেন (৫২) পিয়াস (২৫), নুরুল হকের ছেলে জুনাইদ মুন্সি (৩৬), একই এলাকার আজিজুর রহমান রানা (৩৬), নুরুল আলম (৫০), শামসুল আলমসহ আরও ১০/১২ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী।
এ ব্যাপারে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির (আইসি) ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনাটি শুনে ওইদিন তাৎক্ষণিক আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।
পরে ঘটনার বিস্তারিত চকরিয়া থানার ওসিকে অবহিত করি এবং দুইপক্ষকে থানায় ওসির কাছে যেতে নির্দেশনা দিই। চকরিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে ওইদিন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। এরপর থানায় ঢেকে এনে দুইপক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বলা হয়। তিনি আরও বলেন, থানায় কোন পক্ষই এখনো পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি। তবে দুইপক্ষের কাগজপত্র নিয়ে বৈঠকে বসে তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।