চকরিয়ায় ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে মৎস্য প্রকল্প লুট

1

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ার উপক‚লীয় বদরখালীতে দাবিকৃত মোটা অংকের চাঁদা না দেওয়ায় প্রায় ৩০ একর বিশিষ্ট একটি মিঠা পানির মৎস্য প্রকল্প দখলে নিয়ে দুইদিন ধরে ব্যাপক লুটপাট ও তান্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে একটি দখলবাজ-সন্ত্রাসীচক্রের বিরুদ্ধে। এসময় আতংক ছড়াতে তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে প্রকল্পের পাহারায় নিয়োজিত থাকা কয়েকজন কর্মচারীকে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে পুরো প্রকল্প থেকে দুইদিনে লুট করে নিয়ে যায় অন্তত দশ লাখ টাকামূল্যের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত বুধবার ভোররাত তিনটার দিকে উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের গোয়ারফাঁড়ি খালের মধ্যম অংশস্থ প্রায় ৩০ একর বিশিষ্ট এই মৎস্য প্রকল্পে লুটপাট ও তান্ডবের এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্প ইজারাদারের ছেলে মো. হানিফুল ইসলাম বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে বদরখালী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়াস্থ আহমদ কবির ঘাটের আবদুল আজিজ, রবিউল, শাহজাহানসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ২৫জন অজ্ঞাত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর থানার অপারেশন অফিসারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ দুইবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়। এ সময় পুলিশ মিঠা পানির এই মৎস্য প্রকল্পে লুটপাট ও তান্ডব চালানোর সত্যতা পায়।
প্রকল্পের ইজারাদারের ছেলে হানিফুল ইসলাম জানায়, দীর্ঘ ২০ বছরের বেশী সময় ধরে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ সমবায়ী প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি থেকে লিজপ্রাপ্ত হয়ে গোঁয়ারফাঁড়ি খালের মধ্যম অংশের প্রায় ৩০ একরের এই মৎস্য প্রকল্পে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছিলেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে প্রভাবশালী একটি দখলবাজ-সন্ত্রাসীচক্র ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে তাঁদের কাছ থেকে। মোটা অংকের এই টাকা না দিলে প্রকল্প দখলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন চক্রটি। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার ভোররাত তিনটা থেকে প্রায় ৪০ জনের দখলবাজ-সন্ত্রাসীচক্র একযোগে হামলে পড়ে প্রকল্পের বিভিন্ন স্থানে। এ সময় প্রকল্পের পাহারায় নিয়োজিত তিন কর্মচারীকে পিটিয়ে তাড়িয়ে দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছুঁড়ে দখলবাজ-সন্ত্রাসীরা। এরপর গত দুই দিনে লুট করে নিয়ে যায় প্রকল্পে উৎপাদিত রুই, কাতল, কার্প, বিগ্রেড, নাইলেটিকাসহ বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত দশ লাখ টাকামূল্যের মাছ।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, উপক‚লীয় বদরখালী সমিতি কর্তৃক ইজারা দেওয়া মৎস্য প্রকল্পে লুটপাট ও তান্ডব চালানোর অভিযোগ পাওয়ার পর থানার অপারেশন অফিসারের নেতৃত্বে দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।