চকরিয়ায় খাদ্যবিভাগ ধান-চাল সংগ্রহে ব্যর্থ

1

ইকবাল ফারুক,চকরিয়া

কক্সবাজারের চকরিয়ায় আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে সফলতা পায়নি উপজেলা খাদ্য বিভাগ। খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হলেও প্রান্তিক কৃষক এবং রাইচ মিল মালিকরা এতে সাড়া না দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা খাদ্য বিভাগ। যে কারইে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের শেষ দিন (১৫ মার্চ) পর্যন্ত শুধুমাত্র ১২০ মেট্রিক টন চাল ছাড়া আর কোন ধরনের ধান-চাল সরকারি খাদ্য গুদামে উঠেনি। অথচ আমন মৌসুমে চকরিয়ায় সরকারিভাবে ১৩৪৭ মেট্রিক টন ধান ও ১৬৪১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল উপজেলা খাদ্য বিভাগের।
চকরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে চকরিয়ায় সরকারিভাবে ৩৩ টাকা কেজি দরে ১৩৪৭ মেট্রিক টন ধান ও ৪৬ টাকা কেজি দরে ১৬৪১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত ২৮ ফেব্রæয়ারি ধান সংগ্রহ অভিযানের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক কেজি ধানও গুদামে উঠেনি। অপর দিকে ১৬৪১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের নির্ধারিত সময় সীমা ছিল ১৫ মার্চ পর্যন্ত। এসব চাল সরবরাহ দেয়ার জন্যে উপজেলা খাদ্য বিভাগ স্থানীয় ৬জন রাইচ মিল মালিকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি গুদামে চাল জমা পড়েছে মাত্র ১২০ মেট্রিক টন। ফলে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্য বিভাগও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
উপজেলা খাদ্য বিভাগের তথ্য মতে, কাকারা ইউনিয়নের মেসার্স সোনালী এগ্রো রাইস মিল ২৯৪ মেট্রিক টন, চিরিংগা ইউনিয়নের নিউ জনতা অটো রাইস মিল ২৫৮ মেট্রিক টন, বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়াছড়া স্টেশনে চিরিংগা অটো রাইস মিল ৩২১ মেট্রিক টন, চকরিয়া পৌর এলাকার মেসার্স জাকের অটো রাইস মিল ২৬০ মেট্রিক টন, বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়া বাজার মেসার্স আছমত উল্লাহ অটো রাইস মিল ২৫৮ মেট্রিক টন ও খুটাখালী ইউনিয়নের মেসার্স মেঘনা অটো রাইস মিল ২৫০ মেট্রিক আতপ চাল সরবরাহ দিবে মর্মে খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে কাকারা ইউনিয়নের মিলার মেসার্স সোনালী এগ্রো রাইস মিল ১২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ দিলেও অন্য ৫জন মিলারের কেউ এককেজি চালও সরবরাহ দেয়নি।
চকরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমানে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধান চালের দাম অনেক বেশি। তাই কৃষকরা বেশি লাভের আশায় তাদের উৎপাদিত ধান সরকার নির্ধারিত মূল্যে খাদ্য গুদামে সরবরাহ না দিয়ে বাইরের মিলারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। যে কারণে গত ২৮ ফেব্রæয়ারি সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের শেষদিন পর্যন্ত কৃষকের সরবরাহ করা এক কেজি ধানও সরকারি গুদামে উঠেনি। ফলে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান একেবারেই শূন্য। তিনি আরও বলেন, আতপ চাল সংগ্রহে কিছুটা সফলতা পাওয়া গেছে। চুক্তিবদ্ধ হওয়া ৬জন মিলারের মধ্যে একজন মিলার ১২০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ দিয়েছেন। গত ১৫ মার্চ শেষ হয়েছে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহের নির্ধারিত সময়সীমা। বারবার তাগাদা দেয়ার পরও যেসব রাইচ মিল মালিকরা চুক্তিমতে চাল সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।