নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এটি আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবার সকালে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝরটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মন্থা’।
গতকাল রবিবার সকালে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৬ টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ২৭০, মোংলা থেকে ১ হাজার ৩০০ এবং পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ১ হাজার ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি বর্তমানে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড় আকার নিচ্ছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের উপকূলে সরাসরি আঘাতের সম্ভাবনা নেই। তবে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগ অতিক্রমের পর দুর্বল হয়ে ২৮ থেকে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, ‘বর্তমান গতিপথ অনুযায়ী এটি বাংলাদেশের উপক‚লের দিকে আসবে না। তবে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে দুর্বল হয়ে গেলে এর প্রভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে।তিনি জানান, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে, আর চট্টগ্রাম ও সিলেটে তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে সতর্কতা হিসেবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপক‚লের কাছাকাছি অবস্থান করতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে না যেতে বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ প্রায়ই পরিবর্তিত হয়। ফলে আপাতত ঝুঁকি না থাকলেও আবহাওয়ার হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
২০০৪ সাল থেকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিওএমও) দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১৩টি দেশ নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রথা চালু করে। এই তালিকায় বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ওমান, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ রয়েছে। প্রতিটি দেশ পর্যায়ক্রমে নাম প্রস্তাব করে। যার মধ্যে এবার থাইল্যান্ডের প্রস্তাবিত নাম ‘মন্থা’ বেছে নেওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম অনুযায়ী ‘মন্থা’র অর্থ ‘সুগন্ধি ফুল’।











