ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সহায়তায় স্ত্রীকে হত্যা করেন স্বামী

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

আনোয়ারার পাহাড়ঘেরা পরিত্যক্ত ব্রিকফিল্ডে পড়ে থাকা লাশ গৃহবধূ আমেনা বেগম (৩৩) হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) জেলা ইউনিট। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে একজন পুলিশের কনস্টেবল ও নিহত গৃহবধূ আমেনার ঘাতক স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বিদেশে পালিয়ে যাওয়ায় হত্যাকান্ডের মূলহোতা ইয়াছিন আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নগরীর ডবলমুরিং থানার সুলতান আহমেদের ছেলে জাহেদ নাবিদ (৩০), মো. সোহেল (৩৫) ও আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার ইরফান হোসেন (২৯)। তাদের মধ্যে ইরফান পুলিশের কনস্টেবল। তিনি রাঙামাটি পার্বত্য জেলার গুলশাখালী পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। গত ২১ অক্টোবর তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তারা তিনজনই আমেনা হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনের পর গতকাল শনিবার পিবিআই জেলা ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ অক্টোবর আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন অফিসের পূর্ব পাশের একটি পাহাড়ঘেরা পরিত্যক্ত ব্রিকফিল্ড থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করেন পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের কর্মকর্তারা। আমেনা বেগম কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার কামাল উদ্দিনের মেয়ে। তিনি নগরীর কোতোয়ালি থানার বলুয়ারদিঘীর পাড় আবুল কালাম সওদাগরের কলোনিতে থাকতেন। ইয়াছিন আরাফাত (২৭) তার স্বামী। তবে হত্যাকান্ডের কিছুদিন আগে গৃহবধূ আমেনার অগোচরে ইয়াছিন আরেক নারীকে বিয়ে করেন। বিষয়টি জেনে যান আমেনা। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। এ কারণে ইয়াছিন তার দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু জাহেদ নাবিদ ও ইরফানের সঙ্গে আমেনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।
হত্যা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইয়াসিনসহ অন্যরা মিলে সোহেলের প্রাইভেটকার ভাড়া করেন। এরপর বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমেনাকে প্রাইভেটকারে তুলে ইরফানের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে আনোয়ারার বৈরাগ এলাকার চায়না ইকোনমিক জোন অফিসের পূর্ব পাশের একটি পাহাড় ঘেরা পরিত্যক্ত ব্রিকফিল্ডে নিয়ে গিয়ে আমেনাকে হত্যা করেন। ঘটনার পর আমেনার স্বামী ইয়াছিন বিদেশে চলে যান।
পিবিআই জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন বলেন, মরদেহটি উদ্ধারের পর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপর তদন্ত করে প্রথমে ১৮ অক্টোবর প্রাইভেটকার চালক সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক পরদিন জাহেদ নাবিদ ও ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।