আনোয়ারা প্রতিনিধি
৮ মাস বন্ধ থাকার পর গ্যাস পেয়ে উৎপাদনে ফিরেছে আনোয়ারায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)। রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত পৌনে ১২টায় এ কারখানাটিতে উৎপাদন শুরু হয়। এর আগে, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
জানতে চাইলে সিইউএফএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এখন চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়ায় আবার উৎপাদন শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড আট মাস পুরোপুরি বন্ধ থাকায় উৎপাদনে ফিরতে সময় লাগছে। কর্তফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গত ৩ অক্টোবর সিইউএফএলএ গ্যাস সরবরাহ শুরু করে। গ্যাস পাওয়ার পর সার উৎপাদনে যেতে সময় লাগে ১২ দিন। এখন দৈনিক ৮০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন হচ্ছে। ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড বর্তমানে ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সিইউএফএল সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন এ কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ১২০০ টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়। ইউরিয়া সারের বাইরে এই কারখানায় দৈনিক ৭০০ টন অ্যামোনিয়াও উৎপাদিত হয়। কারখানার উৎপাদিত এসব সার বিসিআইসির ডিলারদের মাধ্যমে প্রতিটন ইউরিয়া সার ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে ইউরিয়া সার থেকে প্রতিদিন আয় হয় পৌনে তিন কোটি টাকা। আর প্রতিটন অ্যামোনিয়া বিক্রি হয় ৫৪ হাজার টাকা করে। এতে মোট ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার দৈনিক অ্যামোনিয়া উৎপাদন হয়। এই হিসাবে দিনে ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকার ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদিত হয়। ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪৮ দিন কারখানাটি বন্ধ থাকায় মোট ৮৩৩ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার ইউরিয়া সার ও ১ হাজার ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার অ্যামোনিয়া উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি।উল্লেখ্য, দেশে বছরে ইউরিয়ার চাহিদা প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে সিইউএফএলসহ অন্যান্য কারখানা ইউরিয়া উৎপাদন করে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। বাকি ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া আমদানি করতে হয়।
১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্তফুলী নদীর দক্ষিণ পারে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় এই সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি দৈনিক ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।