গুজব ছড়িয়ে সিইপিজেড অস্থিতিশীল করা হচ্ছে

1

নিজস্ব প্রতিবেদক

একটি মহল গুজব ছড়িয়ে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকায় (সিইপিজেড) অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে মহানগর পুলিশ (সিএমপি)। রাষ্ট্রবিরোধী একটি মহল সুপকিল্পিতভাবে এসব গুজব ছড়াচ্ছে। গতকাল শনিবার সিএমপির পক্ষ থেকে সা¤প্রতিক সময়ের সিইপিজেডে কয়েকটি ঘটনায় বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন কর্মকর্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) রইছ উদ্দিন বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে কিছু কুচক্রী মহল তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইচ্ছাকৃত গুজব ছড়িয়ে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের ক্ষেপিয়ে তুলে ইপিজেডে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এর সাথে বহিরাগতরাও যুক্ত হচ্ছে।
গুজবের বিষয়ে সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, কারখানার ওপর যাদের জীবিকা নির্বাহ করে সে শ্রমিকরা এসব করতে পারে না। দেশ ও রাষ্ট্রবিরোধী মহল সুপরিকল্পিতভাবে এসব গুজব ছড়াচ্ছে। দেশের পোশাকখাত অস্থিতিশীল হলে এখানে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার তিন শিশুকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে আটকে রেখে ‘জবাই’ করার গুজবে সিইপিজেডে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান উপ-কমিশনার রইছি উদ্দিন।
গত বুধবার রাতে সিইপিজেড ২ নম্বর সড়কের একটি নির্মাণাধীন ভবনে ভাঙা লোহা খুঁজতে যায় তিন শিশু। তাদের বেঁধে রেখে খুন করার গুজবে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে কারখানার শ্রমিকরা। এসময় তারা নির্মাণাধীন ভবনটির পাশাপাশি বেপজা কার্যালয় ভাঙচুর করে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও সংঘর্ষে জড়ায় এবং রাত ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ওই তিন শিশুকে বিক্ষোভকারীদের সামনে হাজির করে।
পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে ছুটি শেষে কিছু শ্রমিক পুনরায় সেখানে বিক্ষোভ ও তাÐব সৃষ্টি করেছিল বলেও পুলিশের ভাষ্য।
গতকাল নগর পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আনুমানিক ১০ থেকে ১৪ বছরের ওই তিন শিশুকেও পরিবারের সদস্যদের সাথে হাজির করা হয়।
উপ-কমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, গত ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সিইপিজেড ২ নম্বর সড়কের একটি নির্মাণাধীন ভবনে তিন শিশু প্রবেশ করে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি ও নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলে। পরবর্তীতে দুই জনকে ছেড়ে দিলেও একজনকে আটকে রাখে।
নির্মাণাধীন ভবনের পার্শ্ববর্তী একটি কারাখানার পঞ্চম তলার কিছু শ্রমিক সেটি দেখতে পেয়ে শিশুদের জবাই করার গুজব ছড়িয়ে দেয়। ছুটি শেষে শ্রমিকরা বিক্ষুব্দ হয়ে নির্মাণাধীন ভবনটিতে তান্ডব চালায় এবং নির্মাণ শ্রমিকদের থাকার শেডসহ বিভিন্ন কিছুতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
রইছ উদ্দিন বলেন, পরদিন বিকালে শ্রমিকরা পুনরায় ওই নির্মাণাধীন ভবনটিতে শিশুদের খোঁজার নাম করে প্রবেশ করে দ্বিতীয় দিনের মত তান্ডব চালায় এবং বেপজা কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বেশকিছু নথিপত্র জ্বালিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধদের মারধরে বেপজার তিন কর্মকর্তা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রবিউল, হাসান ও সাগর নামের এ তিন শিশু জানিয়েছে, সল্টগোলা ক্রসিং, মাইলের মাথা এবং ফ্রি পোর্ট এলাকায় তাদের বাসা। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ভাঙা লোহা খুঁজতে নির্মাণাধীন ভবনটিতে প্রবেশ করেছিল তারা।
রবিউল জানায়, তারা নির্মাণাধীণ ভবনটিতে প্রবেশের পর শ্রমিকরা তাদের ধরে ফেলে। অন্য দুই জনকে চড় থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর তাকে ভেতরে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। পরে লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে সেখানে এসে তাকে ছাড়িয়ে আনে।