পূর্বদেশ ডেস্ক
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মশাল মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল হাসান জানান।
তিনি বলেন, “গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে তিনি ঢাকায় ফিরছিলেন। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তার গাড়ি বহর জ্যামে আটকে থাকাবস্থায় চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে এসে তার গাড়িতে হামলা করে। হামলায় তিনি হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং গাড়ির গ্লাস ও উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। পরে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তাকে নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” খবর বিডিনিউজ’র
তিনি জানান, হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসনাত আব্দুল্লাহ এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এক ফেইসবুক পোস্টে বলেছেন, “হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন।”
এনসিপির গাজীপুরের যুগ্ম আহব্বায়ক আকাশ ঘোষ বলেন, “হাসনাত কোথায় গিয়েছিলেন বা কেন এসেছিলেন তা নিয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে ছিল না। হামলার পর আমাদের কাছে একটা কল আসছে, তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। তখন আমরাও শুনেছি। “আমাদের একটি টিম (ছাত্রদের) ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তারা আসলে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহব্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “গাজীপুর থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহর উপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। ১০-১২টি বাইকে ধাওয়া করে তার গাড়িতে হামলা করা হয়। এতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে তার শরীরেও আঘাত লাগে। “অভ্যুত্থানের মূল নেতৃত্বের উপর সন্ত্রাসীদের এরকম হামলা উদ্বেগজনক এবং ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের এখনো বিচারের আওতায় না আনায় এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে।”
এদিকে হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মশাল মিছিল হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর টাইগার পাস মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাজীর দেউড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে দায়ী করেন।
নেতারা বলেন, ‘হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর বারবার হামলার ঘটনা প্রমাণ করে আমরা বিপ্লবীদের প্রত্যেকের জীবন আজ নিরাপত্তাহীন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমরা বিপ্লবীদের জীবনের নিরাপত্তা দাবি করছি। অন্যথায় এবার আর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ নয়, সরাসরি প্রতিশোধ হবে। ছাত্রলীগ যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিরোধ হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চাই। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সরকারকে বলছি, আমরা আর কোনো কালক্ষেপণ চাই না। বিচারে দেরি হচ্ছে বলেই আওয়ামী লীগ বিপ্লবীদের ওপর হামলার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।’